Advertisement
E-Paper

আশ্বাস ছিল চাকরি কই

শুনেছিলাম, ওঁর নাম অমিত শাহ। বিজেপির খুব বড় নেতা। তিনি খেয়ে গেলেন, আর পরের দিন তৃণমূলের নেতারা এসে নিজেদের পতাকা তুলে দিলেন হাতে। নাম উঠে গেল রাজনীতির খাতায়।

গীতা মাহালি

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৬:১২
সেদিন-এদিন: নেতা আসেন, নেতা যান। দিন কী বদলায়? বুধবার নকশালবাড়ির দয়ারামজোতের চা বাগানে কাজ করছেন রাজু মাহালির স্ত্রী গীতা (বাঁ দিকে)। ছবি: বিশ্বরূপ বসাকমাহালি। বাড়িতে অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র

সেদিন-এদিন: নেতা আসেন, নেতা যান। দিন কী বদলায়? বুধবার নকশালবাড়ির দয়ারামজোতের চা বাগানে কাজ করছেন রাজু মাহালির স্ত্রী গীতা (বাঁ দিকে)। ছবি: বিশ্বরূপ বসাকমাহালি। বাড়িতে অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র

আচ্ছা, কেউ যদি বাড়িতে এসে এক কাপ চা খেতে চায়, তাঁকে না করা যায়! অতিথি ঘরে এলে তাঁকে সাধ্যমতো খাওয়াই আমরা। গত বছর তেমনই হয়েছিল। এলাকার কয়েক জন এসে বলেছিলেন, দিল্লির এক নেতা খাবেন। তাঁর জন্য নিরামিষের নানা পদ রেঁধেছিলাম। তিনি খেতে এলেন আর আমাদের জীবনটাই বদলে গেল!

শুনেছিলাম, ওঁর নাম অমিত শাহ। বিজেপির খুব বড় নেতা। তিনি খেয়ে গেলেন, আর পরের দিন তৃণমূলের নেতারা এসে নিজেদের পতাকা তুলে দিলেন হাতে। নাম উঠে গেল রাজনীতির খাতায়। তার পরেই বদলে গেল চারদিকের ফিসফাস। সকলে বলতে লাগল, তৃণমূল আমাদের অনেক টাকা দিয়েছে!

তাই যদি হয়, তা হলে আমরা এখনও দোরে দোরে ঘুরি কেন? আমার স্বামীকে কত দূর দূর যেতে হয়েছে কাজের খোঁজে। কেন? দু’জনে কাজে বেরিয়ে যাই। সারাদিন ৭ বছরের মেয়ে, ১২ বছরের ছেলে একা থাকে। বাচ্চাগুলি কী খায়, কখন স্নান করে, কী পরে— সে সবের ঠিক-ঠিকানা থাকে না। কাজ করতে করতে যখন ওদের কথা ভাবি, চোখে জল আসে।

তা-ও রটে টাকার কথা। পাড়ার লোকেও বলে। আমি বলি শুনুন, কত পেয়েছি। আর পাঁচটা দলিতকে সরকার ঘর বানানোর যে টাকা দেয়, আমাদেরও তা-ই দিয়েছে। ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। পাকা ঘর উঠেছে। আরও কিছু কাজ করানোর জন্য মন্ত্রী গৌতম দেব ১০ হাজার টাকা নিজে থেকে দিয়েছেন। তার পরেও বারান্দা পাকা করাতে, টিনের পাঁচিল দিতে, গেট বানাতে ৭০ হাজার টাকা দেনা হয়েছে। আমাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, নকশালবাড়ি বিডিও অফিসে অস্থায়ী চাকরি দেওয়া হবে। এখনও হয়নি। এ বার বলা হয়েছে জানুয়ারি মাসে যেতে।

এ দিকে তো শীত পড়ে গেল। চা বাগানে পাতা তোলার কাজ হয়তো আগামী সপ্তাহ থেকেই বন্ধ। তখন ঘরে বসে থাকতে হবে। ধারের কিস্তি কী ভাবে দেব, জানি না। সংসার কী ভাবে চলবে, জানি না। ছেলেমেয়েকে প্রাইভেটে পড়ান যে শিক্ষকরা, তাঁদের বেতন কোথা থেকে দেব, জানি না।

হয়তো পড়ানো বন্ধই করে দিতে হবে এখন।

(গত বছর নকশালবাড়িতে যাঁর বাড়িতে খেয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। অনুলিখন: কিশোর সাহা)

Gita Mahali Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy