Advertisement
E-Paper

তথ্যে স্বচ্ছতা নেই, নালিশ

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও শিলিগুড়ি হাসপাতালের দুই সুপারই দাবি করেছেন, ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি নেই। কিন্তু দু’টি হাসপাতালেই জ্বরের রোগীদের মশারিতে রাখা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৬
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মশারি নেই ডেঙ্গি রোগীদের। — নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মশারি নেই ডেঙ্গি রোগীদের। — নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও শিলিগুড়ি হাসপাতালের দুই সুপারই দাবি করেছেন, ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি নেই। কিন্তু দু’টি হাসপাতালেই জ্বরের রোগীদের মশারিতে রাখা হয়েছে। দু’টি হাসপাতালেরই চিকিৎসকদের অনেকেও জানিয়েছেন, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ডেঙ্গি রোগীরাও রয়েছেন। চিকিৎসকদের একাংশ দাবি করেছেন, ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের ডেঙ্গি আক্রান্ত হিসেবেই চিকিৎসাও চলছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এখনও পর্যন্ত শিলিগুড়ি শহরে ১০৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এর পরেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি দাবি করছে, ডেঙ্গি নিয়ে পরিসংখ্যানে স্বচ্ছতা নেই।

রবিবারও শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল দাবি করেন, ‘‘হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’’ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, ভিড়ে উপচে পড়েছে ওয়ার্ড। পুরুষ-মহিলা দুই ওয়ার্ড মিলিয়ে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ৮০ জন ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র দুই। এই পরিস্থিতিতে কেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে বাড়তি চিকিৎসক আনা হচ্ছে না, সে প্রশ্ন তুলেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় অতিরিক্ত ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে দাবি। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্তা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, ‘‘চিকিৎসার থেকে রোগ ধামাচাপা দিতেই সকলেই ব্যস্ত বলে মনে হচ্ছে।’’ রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলের রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সরকারি মাপকাঠি অনুযায়ী তথ্য দেওয়ার কথা। আমি নিজে হাসপাতালের পরিস্থিতি দেখতে যাব।’’

শিলিগুড়ি হাসপাতালের পুরুষ-মহিলা দুই মেডিসিন ওয়ার্ডে মশারির নীচে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের সকলেই বাইরের পরীক্ষাগার থেকে এনএসওয়ান পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারি পরীক্ষায় কিছু ধরা পড়েনি। প্রশ্ন উঠেছে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা হাসপাতালে হচ্ছে কোথায়? জ্বরে আক্রান্ত রোগীর শরীরে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে কি না দেখতে র‌্যাপিড টেস্ট করাতে হয়। বছর দু’য়েক আগে শিলিগুড়ি হাসপাতালেই তার ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বারে তাও নেই। হাসপাতালে শুধু ম্যাকঅ্যালাইজা টেস্ট হচ্ছে। সেই রিপোর্টও আসতে অন্তত ৬ দিন সময় লাগে। রিপোর্ট আসার আগেই ওষুধে জ্বর কমে গেলে রোগীকে তড়িঘড়ি ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রবণতাকে তথ্য গোপনের চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি।

নিউ সিনেমা রোড লাগোয়া আনন্দময়ী কালীবাড়ির পুরোহিত পার্থ চৌধুরী গত ১ নভেম্বর জ্বর নিয়ে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি হন। কোনও পরীক্ষা ছাড়াই পরদিন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে রক্তে এনএস ওয়ান পজিটিভ পেয়ে দু’দিন পরে তাঁকে হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আলাদা ফিভার ওয়ার্ড খোলা হলেও মেডিসিন বিভাগে জ্বরের অনেক রোগী রয়েছেন। সন্দেহভাজন ডেঙ্গি রোগীরা জ্বর নিয়ে ভর্তি থাকলেও হাসপাতাল মশারি দেয়নি। সুপার নির্মল বেরা বলেন, ‘‘ম্যাকঅ্যালাইজা পরীক্ষায় জ্বরে আক্রান্তদের অনেকরই ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। বাকিদের রিপোর্ট এখনও মেলেনি। মশারি নিয়ে খোঁজ নেব।’’

dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy