বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা গেট দিয়ে অবাধ যাতায়াত। — নিজস্ব চিত্র
বিপাকে পড়লেই সিসিটিভির কুমির ছানা দেখানো হয় বলে অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
গত চার বছরে একাধিকবার সিসিটিভি বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। উপাচার্য সোমনাথ ঘোষও আশ্বাস দিয়েছিলেন সিসিটিভি বসানো হবে। কোন জায়গাগুলিতে সিসিটিভি বসানো হবে, তা কয়েক বার কমিটি গড়ে সমীক্ষা পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেই সব চুপচাপ। আজও সিসিটিভি বসেনি ক্যাম্পাসে।
ক্যাম্পাস ঘেঁষা একটি মেসে এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর নিরাপত্তা নিয়ে ফের সেই প্রশ্ন উঠেছে। এবং এ বারও যথারীতি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ। তবে অভিজ্ঞতা থেকেই কর্তৃপক্ষের ওই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের অনেকেই।
উপাচার্য বলেন, ‘‘গ্রন্থাগারে সিসিটিভি বসানোর বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাবের বিষয়টিও কর্মসমিতিতে পাশ করে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখনও উত্তর আসেনি।’’ তবে তাঁর কথায়, ‘‘বেশি দেরি হলে প্রয়োজনে নিজেরাই এরপর এগোব।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে এক দফায় সমীক্ষা করে বলা হয়, অন্তত ৯টি জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হোক। তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার মূল দু’টি গেটে দু’টি, ছাত্রীদের হস্টেলগুলি চত্বরে তিনটি, ক্যাম্পাসের ল’মোড়ে একটি, বয়েজ হস্টেলের কাছে দু’টি, শালবনে যাওয়ার রাস্তায় একটি সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। খরচ ধরা হয় ১৪ লক্ষ টাকা। ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরতে পারবে এমন সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলা হয়। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। পরে ফের নিরাপত্তা নিয়ে হইচই শুরু হয় উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠলে। সেই মতো গত বছর ৬ জনের কমিটি গড়ে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ওই কমিটি গোটা ক্যাম্পাসে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কথা জানায়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হয়। তবে সেখান থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
অগস্টে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার পর প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান বিক্ষোভ করে ছাত্রীরা। সে সময়ও উপাচার্য দ্রুত ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। গত ছয় মাসেও যে সেই কাজ হয়নি তা নিয়েই পড়ুয়াদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
শুক্রবার যে মেস থেকে আইন বিভাগের এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়, সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডের পাশেই। ছাত্রীটিকে একটি ছেলে বারবার উত্ত্যক্ত করত বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থেই সিসিটিভি বসানোর কাজ দ্রুত করা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy