শোক: মৃতর পরিজন। —নিজস্ব চিত্র
বুকে ব্যথা নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন এক রোগী। তাঁর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে শিলিগুড়ির সেবক রোডের ওই নার্সিংহোমের কয়েকটি দরজার কাঁচ ভেঙে দেন ক্ষুব্ধ পরিজনেরা। কাগজপত্রও ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
রোগীর পরিবারের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে বাইপাস সার্জারি করতে হবে বলে জানিয়েছিল নার্সিংহোম। অভিযোগ, এক দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও তার ব্যবস্থা করা হয়নি আবার অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতিও দেননি চিকিৎসকেরা। রোগীকে আটকে রেখে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে চিকিৎসক এবং সরঞ্জাম এনে অস্ত্রোপচারের তোড়জোড় চালাচ্ছিলেন। দেরির কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের নয়া আইন অনুযায়ী অভিযোগ নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ নার্সিংহোমের তরফে বিহারের আড়ারিয়ার বাসিন্দা পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সুশান্ত সেনগুপ্তকে (৪৬) মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃতের আত্মীয়া সাগরিকা সেনগুপ্তের অভিযোগ, ‘‘নার্সিংহোমের বাইপাস সার্জারির পরিকাঠামোই নেই। প্রথমে বলা হয় অন্য নার্সিংহোমে সার্জারি হবে। আমাদের নিয়ে গিয়ে কথাও বলানো হয়। তার পর আবার বলে এই নার্সিংহোমেই সার্জারি হবে। ব্যবসা করতে গিয়ে আমাদের রোগীকে ওরা মেরে ফেলল।’’ বুধবার রাতে বুকে ব্যাথা শুরু হওয়ায় সুশান্তবাবুকে বৃহস্পতিবার ভোরে সেবক রোডের নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পরিবারকে জানানো হয় সুশান্তবাবুর ধমনীতে তিনটে ‘ব্লকেজ’ রয়েছে। সে দিন সন্ধে থেকে রাত দশটা পর্যন্ত অ্যানজিওপ্লাস্ট করে ‘ব্লকেজ’ মুক্ত করার চেষ্টা হয়। সুশান্তবাবুর ভগ্নীপতি বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘দু’টো ব্লকেজ মুক্ত করা গেলেও একটিতে স্টেন আটকে গিয়েছে বলে জানানো হয়। ক্যালসিয়াম বেশি থাকায় এমন হয়েছে দাবি করে দ্রুত বাইপাস সার্জারির কথা বলা হয়।’’ অথচ শুক্রবার সার্জারির পদক্ষেপই কর্তৃপক্ষ করেনি বলে অভিযোগ। নার্সিংহোমের মেডিক্যাল ডিরেক্টর অশোক খান্ডেলওয়ালের দাবি, গাফিলতি হয়নি। তাঁর দাবি, ‘‘হৃদরোগেই মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীকে দেখছিলেন। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে রবিবার অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। তার আগেই মৃত্যু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy