Advertisement
E-Paper

দশ কাঠা জমি বিক্রি করেও কুলোচ্ছে না চিকিৎসা ব্যয়

তিন মাস ধরে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন এলাকার এক বৃদ্ধ দম্পতি। ১০ কাঠা জমিও বিক্রিও করতে হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৮
অসহায়: দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল ছেলে। তপনের হারান প্রামাণিক ছেলের চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল দশ কাঠা জমিও বিক্রি করে দেন তিনি। তবুও ছেলে সুস্থ হচ্ছে না। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

অসহায়: দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল ছেলে। তপনের হারান প্রামাণিক ছেলের চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল দশ কাঠা জমিও বিক্রি করে দেন তিনি। তবুও ছেলে সুস্থ হচ্ছে না। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

তিন মাস ধরে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন এলাকার এক বৃদ্ধ দম্পতি। ১০ কাঠা জমিও বিক্রিও করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ফের ছেলের শরীর খারাপ হওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে ফের তাঁকে ভর্তি করান মাটিগাড়ার হিমাঞ্চল বিহারের ওই নার্সিংহোমে। সেখানে আর এক দফায় অস্ত্রোপচার হয়। তারপরে ৮০ হাজার টাকা না মিললে আর চিকিৎসা হবে না বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তাতেই বিপাকে পড়েছেন দম্পতি।

যদিও নার্সিংহোমের কর্ণধারদের পক্ষে অ্যানি ইউ চ্যাং জানান, সমস্ত চিকিৎসা পরিবারটির সম্মতিতে হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা একেবারেই নয়, প্যাকেজের টাকা তারাই ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন। কোনও জোরাজুরি হয়নি। উল্টে চিকিৎসকেরা ২৫ হাজার টাকা ওষুধ বিনা মূল্যে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। এখন বাইরে গিয়ে এ সব বলছেন কেন জানি না।’’

বুধবার মহকুমা আইনি পরিষেবা সমিতির চেয়ারম্যান অজয়কুমার দাসের কাছে লিখিত ভাবে নার্সিংহোমটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ওই দম্পতি। অভিযোগ পাওয়ার পরেই পরিষেবা সমিতির তরফে নার্সিংহোম কতৃর্পক্ষ এবং দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি পাঠানো হয়। তাঁদের আগামী ২২ মার্চ সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে পরিষেবা সমিতির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে। সমিতির চেয়ারম্যান শিলিগুড়ির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকও। তিনি ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে জানিয়ে দিয়েছেন, নথিপত্র পরীক্ষার পরে কোনও গরমিল ধরা পড়লে অবশ্যই আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পেশায় দিনমজুর দম্পতি হারান প্রামাণিক এবং বেলি প্রামাণিকের অভিযোগ, চিকিৎসা, থাকা-খাওয়া, যাতায়াত সব মিলিয়ে গত ডিসেম্বর থেকে সব মিলিয়ে ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। দুই দফায় অস্ত্রোপচারের জন্য ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। হারান বলেন, ‘‘এখন আবার ৮০ হাজার টাকা চাইছে। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতেও বহু টাকা লেগেছে। চিকিৎসার পূর্ণাঙ্গ কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই। কিছু রসিদ, নথি রয়েছে। এখন পথে বসেছি।’’

ওই দম্পতির বাড়ি তপন থানার রামপাড়ায়। ছেলে লিটন ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। গত ১৫ ডিসেম্বর তিনি কালিয়াগঞ্জ যাওয়ার পথে ছোট গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় গুরুতর চোট পান। রায়গঞ্জ, মালদহ হয়ে তাঁকে শিলিগুড়ির নার্সিংহোমটিতে আনা হয়েছিল। মাস খানেক চিকিৎসার পর জানুয়ারি মাসে তাকে ছাড়া হয়। বাড়ি ফিরে ফের অসুস্থ হতেই ১ ফেব্রুয়ারি ফের নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে লিটন সেখানেই চিকিৎসাধীন।

Couple Charges Nursing Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy