Advertisement
২৪ মে ২০২৪
Virtual Conference

Mamata Banerjee: অনুদান বাড়ল পুজোয়, কটাক্ষ

জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্তের দাবি, আর্থিক পরিকল্পনা ছাড়া, এমন খরচ সরকারকে দেউলিয়া করবে।

পুজো-বৈঠক: ‘ভার্চুয়াল সভা’য় মুখ্যমন্ত্রী,

পুজো-বৈঠক: ‘ভার্চুয়াল সভা’য় মুখ্যমন্ত্রী,

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২২ ০৮:২৬
Share: Save:

‘ভার্চুয়াল’ সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। একশো দিনের কাজের টাকা নেই, সরকারের সব কাজের তহবিল কমানো হয়েছে।’’ তার পরে যখন জানালেন, কম টাকাতেও পুজো ভাল হয়, তখন চুপ উপস্থিত ক্লাব-কর্তারা। গতবার পুজোয় ৫০ হাজার করে দেওয়া হয়েছে ক্লাবগুলিকে। এ বার কি তা হলে মিলবেই না? এ সব ভাবতে ভাবতেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ বারের পুজোয় বিদ্যুৎ খরচের ছাড় গত বছরের ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করার জন্য তিনি বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদকে অনুরোধ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ বার ভাঁড়ার শূন্য। তবে মা দুর্গা ভাঁড়ার ভর্তি করবেন আশা করে এ বার কষ্ট থাকা সত্ত্বেও গত বারের দেওয়া ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সেটা ৬০ হাজার টাকা করে দিলাম।’’ এ কথা শুনেই শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চ থেকে জলপাইগুড়ি প্রয়াস হল, সর্বত্র উপস্থিত ক্লাব কর্মকর্তারা হাততালিতে ফেটে পড়েন। যদিও এ নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির সমালোচনা করতে ছাড়ছে না।

শিলিগুড়ির রথখোলা নবীন সঙ্ঘ ক্লাবের সভাপতি সুকুমার সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আমরা খুশি।’’ দেশবন্ধুপাড়ার ‘অপরাজিতা’ পুজো কমিটির মহিলা সদস্য অনীতা ঘোষ, পুতুল দেবগুপ্ত, জলপাইগুড়ির দক্ষিণ বামনপাড়া মহিলা মঞ্চ পুজো কমিটির বেবি করেরা জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় তাঁদের মতো ছোট পুজো কমিটিগুলির অনেকটাই সুবিধে হবে। ‘অপরাজিতা’র সদস্যেরা জানালেন, পুজোর জন্য তাঁরা চাঁদা সংগ্রহ করেন না। এমনটাই আশা করেছিলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী আর্থিক সহায়তা বাড়াবেন। জলপাইগুড়ির সেনপাড়া পোস্ট অফিস মোড় পুজো কমিটির সম্পাদক সুদীপ্ত মানী বলেন, ‘‘বিদ্যুতের বিল হয় প্রায় ১৩-১৪ হাজার টাকা। ছাড় দেওয়ায়, অনেক কমে হয়ে যাবে।’’ ‘জাগ্রত সঙ্ঘ’-এর গোপাল চন্দ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি। মিছিল, পুজো কার্নিভাল সফল করতেও উদ্যোগী হব।’’

শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ভাবে দান-খয়রাতি কি পুজোর সাহায্য, নাকি রাজ্যকে শ্মশান বানাতে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচির প্রণামি, সেটা মানুষকে বুঝতে হবে।’’ প্রাক্তন মেয়র তথা বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রীদের স্বরূপ মানুষ চিনে যাচ্ছে। তাই এখন ক্লাবকে টাকা দিয়ে, খেলার মাঠে গিয়ে নানা কৌশল নিচ্ছেন। রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন।’’

বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, ‘‘সরকারি টাকা উৎসবে অনুদান দিয়ে মহৎ সাজার চেষ্টা করে কী লাভ হবে! মানুষ সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, সেটা দেখুন।’’

জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্তের দাবি, আর্থিক পরিকল্পনা ছাড়া, এমন খরচ সরকারকে দেউলিয়া করবে। ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির চেয়ারম্যান গোবিন্দ রায় বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে যখন সরকার নানান আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ছে, তখন মানুষের নজর ঘোরাতেইএ সব হচ্ছে।’’

অভিযোগ উড়িয়ে শিলিগুড়ির মেয়র তৃণমূলের গৌতম দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আগামী ১ সেপ্টেম্বর মিছিল হবে। এ বার পুজোয় কার্নিভালের আয়োজন করা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় সব পুজো উদ্যোক্তাই খুশি। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে মিছিল এবং কার্নিভাল সফল করতে তুলতে আমরা উদ্যোগী হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Virtual Conference Mamata Banerjee durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE