রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।
রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার বারোগন্ডার বাসিন্দা দুঃস্থ রতন সরকার মূক-বধির। প্রায় সাত মাস ধরে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র পাওয়ার জন্য রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ঘুরছেন তিনি। একাধিক বার মেডিক্যালের বহির্বিভাগে তিনি নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককেও দেখিয়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে মেডিক্যালে তাঁর শ্রবণ সক্ষমতার পরীক্ষা হলেও, এখনও পর্যন্ত ‘স্পিচ ইভ্যালুয়েশন’, অর্থাৎ, তাঁর কথা বলার সক্ষমতার পরীক্ষা হয়নি। তাই তিনি শংসাপত্র নিতে চিকিৎসকদের বোর্ডে হাজির হতে পারছেন না।
রতনের সাহায্যকারী রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গির বাসিন্দা স্বরূপ দত্ত বলেন, “কথা বলার সক্ষমতার পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ রতনকে কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপড হাসপাতালে রেফার করেছেন। রতন প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় চলেন। কলকাতার ওই হাসপাতালে গিয়ে রতনের ওই পরীক্ষা করানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই।”
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার পরে ছ’বছর কাটতে চলেছে। এখনও পর্যন্ত মেডিক্যালে প্রতিবন্ধীদের ‘স্পিচ ইভ্যালুয়েশন’ অর্থাৎ, তাঁদের কথা বলার সক্ষমতার পরীক্ষা করানোর পরিকাঠামো চালু হয়নি। মেডিক্যাল সূত্রের খবর, মূক-বধির বাসিন্দাদের প্রতিবন্ধী শংসাপত্র পেতে হলে, ওই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। দীর্ঘদিন ধরেই মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ মূক-বধিরদের শ্রবণ সক্ষমতার পরীক্ষা করলেও, তাঁদের কথা বলার সক্ষমতার পরীক্ষার জন্য কলকাতার ন্যাশলাল ইনস্টিটিউট অব হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপড হাসপাতালে রেফার করছেন। অনেকে শারীরিক ও আর্থিক সমস্যায় কলকাতায় গিয়ে ওই পরীক্ষা করাতে পারছেন না। ফলে, তাঁরা মেডিক্যালের চিকিৎসকদের বোর্ডে হাজির হতে পারছেন না। ‘বিশ্ব বাংলা প্রতিবন্ধী সমিতি’র উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক গৌর সরকার বলেন, “মেডিক্যাল কলেজের মতো আধুনিক হাসপাতালে মূক-বধিরদের কথা বলার সক্ষমতার পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই ভাবা যায় না। মূক-বধির প্রতিবন্ধীদের হয়রানি রুখতে সংগঠন আন্দোলনে নামবে।” এ দিন মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায়ের দাবি, “পরিকাঠামো ও কর্মীর অভাবে মেডিক্যালে ‘স্পিচ ইভ্যালুয়েশন’ চালু করা যাচ্ছে না। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সরকারি নির্দেশ পাঠিয়ে পরিকাঠামো তৈরি করলে, মেডিক্যালে ওই পরিষেবা চালু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy