রাজনৈতিক নয়, পারিবারিক কারণ। আরও স্পষ্ট করে বললে প্রণয়ঘটিত কারণে কাকা-ভাইপো খুন হয়েছেন। কোচবিহারের মাথাভাঙায় জোড়া খুনের তদন্ত করে এমনই জানাল পুলিশ। শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছে, খুনের মামলায় মোট তিন জন গ্রেফতার হয়েছেন। একজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
বৃহস্পতিবার মাথাভাঙা-১ ব্লকের হাজরাহাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাসীতে খুন হন মানব সরকার (৪৫) এবং যাদব সরকারের (২২)। সম্পর্কে তাঁরা কাকা-ভাইপো এবং দু’জনেই বিজেপি কর্মী। অন্য দিকে, জোড়া খুনের অব্যবহিত পরে পরে জেলা তৃণমূলের তরফে সুধীর চৌধুরী নামে এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। ফলত খুনের নেপথ্যে রাজনীতি রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শুরু হয় শোরগোল।
তবে শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছে, ওই জোড়া খুনের ঘটানার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। তারা জানিয়েছে, জনৈক ফলান সরকারের মেয়ের সঙ্গে যাদব সরকারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল বাবার। ওই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার যাদব নামে যুবকটিকে লোহার রড এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। মারা যান তিনি। যাদবের কাকা মানস ভাইপোকে রক্ষা করতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। মারের চোটে তিনিও মারা যান। গন্ডগোলে জড়িয়ে আহত হন আরও বেশ কয়েক জন। ওই ঘটনার পরে ফলান-সহ স্থানীয় বেশ কয়েক জনের নামে থানায় অভিযোগ জমা হয়। তার ভিত্তিতে সুধীর সিকদার, চঞ্চলা সরকার এবং কানাই শিকদার নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। তবে ফলান এখনও পলাতক। উল্লেখ্য, ধৃতদের মধ্যে সুধীর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। তিনি পলানের পরিবারের সদস্য। খুনের মতো ঘটনায় তাঁর নাম জড়ানোয় তাঁকে বহিষ্কার ঘোষণা করে শাসকদল।
আরও পড়ুন:
কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্দীপ কাররা বলেন, ‘‘ফলান সরকারের মেয়ের সঙ্গে যাদব সরকারের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদের সূত্রপাত। এর আগেও কয়েক বার যাদবকে তাঁর মেয়েরে সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করেছিলেন ফলান। বৃহস্পতিবার যাদবের সঙ্গে ফলান কথা বলতে গিয়েছিলেন। সেখানেই বিবাদের শুরু।’’ তিনি জানান, বাগ্বিতণ্ডার সময় যাদবকে মারধর করেন ফলান এবং তাঁর পরিবারেল লোকজন। যাদবের কাকা মানব সেখানে গেলে তাঁকেও পেটানো হয়। দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, তাদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলে, ‘‘ফলান সরকার বর্তমানে পলাতক। কিন্তু পুলিশ শীঘ্রই তাঁকে ধরে ফেলবে।’’