Advertisement
E-Paper

‘বাংলাদেশিদের প্রবেশ নিষেধ’! শিলিগুড়ি, মালদহ ও কোচবিহারে বিজ্ঞপ্তি সাঁটা হচ্ছে হোটেলে হোটেলে

হোটেলমালিকদের কেউ বলছেন, যেখানে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে সে দেশের কাউকে হোটেলে থাকতে দিলে সমস্যায় পড়তে পারেন তাঁরা। অনেকে বলছেন, প্রতিবাদ জানাতেই এই অবস্থান।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৩৭
Hotels ban Bangaldeshi

শিলিগুড়িতে একটির হোটেলের দেওয়ালে বাংলাদেশি অতিথিদের উদ্দেশে বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব ছবি।

বাংলাদেশি অতিথিরা থাকতে পারবেন না পশ্চিমবঙ্গের তিন জেলার হোটেলে। ভারত সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য এবং সে দেশে স‌ংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তরবঙ্গের তিন জেলার হোটেল কর্তৃপক্ষ। হোটেলে হোটেলে ওই মর্মে বিজ্ঞপ্তি সেঁটে দিচ্ছেন তাঁরা। হোটেলমালিকদের কারও কারও দাবি, যেখানে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে সে দেশের কাউকে হোটেলে থাকতে দিলে সমস্যায় পড়তে পারেন তাঁরা। বড় অংশের হোটেলমালিকেরা বলছেন, প্রতিবাদ জানাতেই এই অবস্থান নেওয়া হল।

মালদহের হোটেলেগুলির দরজা বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ হতে চলেছে, এমন খবর বৃহস্পতিবারই জানা গিয়েছিল। এত দিন মেডিক্যাল ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যে বাংলাদেশিরা পশ্চিমবঙ্গে আসতেন, তাঁদের অনেকেই মালদহের হোটেলগুলিতে উঠতেন। কিন্তু সে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখে ‘মালদহ হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী জানিয়ে দেন, এ বার থেকে আপাতত জেলার হোটেলগুলিতে বাংলাদেশের কোনও অতিথি জায়গা পাবেন না। তিনি বলেন, ‘‘যে হেতু ওখান থেকে পাসপোর্ট, ভিসা হচ্ছে না, সেই কারণে আমরাও হোটেলে ঘর দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।’’

একই কথা বলছেন কোচবিহারের হোটেলমালিকেরাও। ‘কোচবিহার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়েছে, ভারত সরকার বাংলাদেশিদের ভিসা পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে হোটেল মালিক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশিদের জন্য পরিষেবা বন্ধ রাখবে। শুক্রবার সংগঠনের সভাপতি ভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘বর্তমানে বাংলাদেশে যে ভাবে ভারতবিরোধী মন্তব্য হচ্ছে, হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে, তারই প্রতিবাদে আমরা, কোচবিহারের হোটেল মালিকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বাংলাদেশি কোনও নাগরিককে আমরা হোটেল বুকিং করতে দেব না। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

শিলিগুড়ির হোটেলগুলির দেওয়ালে নোটিস সাঁটানো হচ্ছে, ‘বাংলাদেশিদের প্রবেশ নিষেধ।’ বস্তুত, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসেই ‘শিলিগুড়ি হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাদের আওতাধীন হোটেলগুলোতে বাংলাদেশের নাগরিকদের জায়গা দেওয়া হবে না। তবে বেশ কিছু কারণে ছাড় দেওয়া হচ্ছিল। যেমন, ও পার বাংলা থেকে কেউ চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে এ রাজ্যে এলে হোটেলে জায়গা পেতেন। তা ছাড়াও শিক্ষার্থীরাও থাকতে পারতেন। কিন্তু এখন থেকে আর কাউকেই রাখা হবে না।

‘শিলিগুড়ি হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সহ-সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘ভারত সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন ভিসা কেন্দ্রগুলি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তেমন আমরাও সর্বসম্মত ভাবে বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করলাম।’’ তিনি আরও জানান, শিলিগুড়িতে সংগঠনের আওতায় ১৮০টি হোটেল রয়েছে। সমস্ত হোটেলেই এই নিয়ম জারি করা হয়েছে। সৌমেন সাহা নামে শিলিগুড়ির এক হোটেলমালিকের কথায়, ‘‘এটার প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশ যে ভাবে অরাজকতাকে প্রশয় দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিবাদে আমাদের তরফে যতটুকু সম্ভব ততটা করলাম।’’

হোটেল সংগঠনগুলির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিজেপির বক্তব্য, অবিলম্বে সারা রাজ্যে এই পন্থা নেওয়া হোক। অন্য দিকে, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বক্তব্য, হোটেলমালিকেরা নিজেদের মতো করে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। আর বৈদেশিক বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এ নিয়ে কোনও অবস্থানের কথা বা নির্দেশিকা জানানো হলে তা রাজ্য সরকারও মানবে। আলাদা করে এই বিষয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কেউ মন্তব্য করতে রাজি নন। জেলা তৃণমূলের নেতারা বলছেন, সংবেদনশীল বিষয়। এ ব্যাপারে যদি কিছু বলার থাকে একেবারে শীর্ষ নেতৃত্বই জানাবেন।

Hotels North Bengal Bangladeshi Bangladesh Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy