Advertisement
E-Paper

‘নিখোঁজ’! প্রশান্ত বর্মণের নামে পোস্টার, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও ধরা যায়নি রাজগঞ্জের বিডিও-কে

শনিবার রাজগঞ্জের বিডিও অফিসের সামনে বিভিন্ন জায়গায় প্রশান্তের ‘সন্ধান চাই’ পোস্টার সাঁটাতে দেখা যায় স্থানীয় এসএফআই কর্মীদের। বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, অভিযুক্ত বিডিও কোথায়? পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:২১
রাজগঞ্জের বিডিও অফিসের বাইরে প্রশান্ত বর্মণের সন্ধান চেয়ে পোস্টার পড়ল।

রাজগঞ্জের বিডিও অফিসের বাইরে প্রশান্ত বর্মণের সন্ধান চেয়ে পোস্টার পড়ল। —নিজস্ব চিত্র।

দত্তাবাদের স্বর্ণব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যাকে অপহরণ এবং খুনের মামলায় তাঁকেই ‘মূল অভিযুক্ত’ বলেছে পুলিশ। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে। কিন্তু এখনও তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোথায় আছেন রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণ, তার হদিস নেই পুলিশের কাছে। এ বার তাঁর সন্ধানে পোস্টার পড়ল রাজগঞ্জ বিডিও অফিসের সামনে! পোস্টারে তাঁর ছবি রয়েছে। আর বড় বড় করে লেখা, ‘রাজগঞ্জের বিডিও নিখোঁজ, সন্ধান চাই’!

শনিবার রাজগঞ্জের বিডিও অফিসের সামনে বিভিন্ন জায়গায় প্রশান্তের ‘সন্ধান চাই’ পোস্টার সাঁটাতে দেখা যায় স্থানীয় এসএফআই কর্মীদের। বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, অভিযুক্ত বিডিও কোথায়? পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ বা ছাত্ররা আন্দোলন করলে পুলিশ অতিসক্রিয়তা দেখায়। কিন্তু এখন এক জন ফেরার সরকারি আধিকারিককে ধরতে কেন এত অনীহা তাদের?’’

শনিবার বেলা গড়াতেই বিডিও অফিসের সামনে বেশ কয়েক জন এসএফআই কর্মীকে জড়ো হতে দেখা যায়। তাঁদের হাতে ছিল ছিল ছোট ছোট লিফলেট, যাতে বড় অক্ষরে লেখা— ‘রাজগঞ্জের বিডিও নিখোঁজ, সন্ধান চাই’। অফিস চত্বরে আসা মানুষজন থেকে শুরু করে পথচলতি টোটো ও বাইক আরোহীদের থামিয়ে তাঁরা এই লিফলেট বিলি করেন। শুধু তা-ই নয়, পরে বিডিও অফিসের প্রধান ফটকের দু’পাশে সেই লিফলেট সেঁটেও দেওয়া হয়।

এসএফআই নেতা দিলদার মহম্মদ প্রশ্ন তোলেন, “আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরেও পুলিশ কেন চুপ? সাধারণ মানুষ সামান্য আন্দোলন করলে বা চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের দাবি জানালে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে লাঠি উঁচিয়ে আসে। অথচ এক জন খুনে অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ— এটা চরম ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই নয়।”

গত ২৯ অক্টোবর নিউ টাউনের যাত্রাগাছি থেকে উদ্ধার হয় স্বর্ণকার স্বপনের দেহ। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এ পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই মামলায় নাম জড়ায় প্রশান্তের। তিনি এই ঘটনার ‘মূল অভিযুক্ত’। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতারের আগেই প্রশান্ত বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আর্জি জানান। সেই আর্জি মঞ্জুর করে বারাসত আদালত। তবে সেই জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করে বিধাননগর পুলিশ। চলতি সপ্তাহেই প্রশান্তের আগাম জামিনের নির্দেশ খারিজ করে দেয় হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চ। পাশাপাশি, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজগঞ্জের বিডিও-কে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশও দেয় আদালত।

তবে ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আত্মসমর্পণ করেননি প্রশান্ত। উল্টে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তবে এখনও তাঁর মামলা শীর্ষ আদালতে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়নি। তার আগেই বিধাননগর মহকুমা আদালতে প্রশান্তের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। আদালতে বিধাননগর পুলিশ দাবি করে, স্বর্ণকার স্বপনকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় ‘কিংপিন’ প্রশান্ত। তদন্ত এখন যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে রাজগঞ্জের বিডিও-কে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে যাতে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। পুলিশের আবেদন মেনে রাজগঞ্জের বিডিও-র বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তবে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও প্রশান্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

BDO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy