রাজকীয়: এখানেই নহবতের আসর বসত। নিজস্ব চিত্র
রাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের মন্দিরে ফের বন্ধ নহবতের সুর। তাতেই ক্ষুব্ধ কোচবিহারের বাসিন্দারা।
সকালে বিগ্রহের ঘুম ভাঙানো, দুপুরে স্নান থেকে সন্ধ্যারতি কোনও সময়েই বাজছে না নহবতের বাদ্যযন্ত্র। দেবোত্তর ট্রাস্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, গত নভেম্বরেই রাস উৎসবের মুখে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা নহবত চালু হয়। উদ্যোগী হয়েছিলেন বোর্ডের সভাপতি, জেলাশাসক কৌশিক সাহা। বারাণসী থেকে অভিজ্ঞ সানাইবাদককে আনা হয়। ওই শিল্পীর সঙ্গে এসেছিলেন তার বাবাও। তিনিও মাঝেমধ্যে সানাইয়ের সুর তুলে ছেলেকে সাহায্য করতেন। কোচবিহারে অসুস্থ হয়ে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তার পরে ছেলে বারাণসী ফিরে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। ডিসেম্বরের শেষে ফের অনিয়মিত হয়ে যায় নহবত।
দেবোত্তর কর্তৃপক্ষের দাবি, সানাইবাদকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি আবার জেলায় ফিরবেন। যদিও কবে ফের ওই নহবত ফের চালু হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনও তারিখ তাঁরা জানাতে পারেননি। জেলাশাসক তথা দেবোত্তর সভাপতি কৌশিক সাহা অবশ্য বলেছেন, “খুব দ্রুত ফের ওই নহবত চালু হয়ে যাবে।”
সানাই, নাগরাজুড়ি, করতালের মিলিত সুর নহবত নামে পরিচিত। অভিযোগ, কয়েক বছর আগে মূল সানাইবাদক হরিশঙ্কর বিনবংশীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই ওই নহবত প্রায় অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। এতেই বোর্ডের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, একজন শিল্পীর সমস্যা হতেই পারে, সেক্ষেত্রে বিকল্প শিল্পীর ব্যবস্থা রাখা দরকার। গবেষকরা জানান, নহবতের সঙ্গে কোচবিহারের সম্পর্ক অন্তত দুশো বছরের পুরনো। ১৮৯০ সালে বৈরাগি দিঘির পাড়ে ওই মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সামনে নহবতখানা তৈরি করা হয়েছে। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “ওই মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই নহবতের সুরে মদনমোহন বিগ্রহের ঘুম ভাঙানোর রেওয়াজ চালু হয়। গত কয়েক বছরে নানা কারণে তা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। এটা কাঙ্ক্ষিত নয়। পরম্পরা নিয়মিত চালু রাখার বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy