ভূপতিত: হবিবপুরে ঝড়ে উড়েছে চাল। নিজস্ব চিত্র
সকালে ঝকঝকে হলেও বেলা বাড়তেই নববর্ষের আকাশের চেহারা বদলে যায়। আচমকা চারদিকের আলো কমে আসে। কোথাও প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যায়। ঝোড়ো হাওয়ায় মালদহের আম বাগানে বেশ ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টি হয়েছে রায়গঞ্জ, হেমতাবাদে। হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে ক্যারন স্টেশনের টিনের শেডও। কত নাচগান, বর্ষবরণের অনুষ্ঠান যে পিছোতে হয়েছে তার হিসেব করাই মুশকিল। বর্ষবরণে দুর্যোগের খণ্ডচিত্র আনন্দবাজারে।
বালুরঘাট
পয়লা বৈশাখের বিকেলে মাত্র ২০ মিনিটের প্রবল বৃষ্টিতে ভাসল বালুরঘাটের রাস্তা। বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ মেঘ কালো করে অন্ধকার নেমে আসে দক্ষিণ দিনাজপুরে। গাড়ি ও বাইককে আলো জ্বালিয়ে চলতে হয়। কয়েক মিনিটের দমকা হাওয়ায় ধুলো ঝড়ের পর বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল বৃষ্টি নামে। ৩টা ৫০ মিনিট নাগাদ বৃষ্টি কমে গিয়ে ফের দিনের আলো ফুটে উঠলে মনমরা হয়ে পড়া ব্যবসায়ীরা হালখাতা উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করেন। তবে রাস্তার জমা জল নিয়ে পয়লা দিনেই পুরসভা-পূর্ত দফতর চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন শীল অভিযোগ করেন, ‘‘পূর্ত দফতর নর্দমার কাজ করেছে। তার পরেই সমস্যা হচ্ছে।’’ পূর্ত দফতরের দাবি পুরসভাকে জানিয়ে কাজ হয়েছে।
মালদহ
সকালে রোদ ঝলমলিয়ে উঠেছিল। দুপুর দুটো থেকে আকাশের মুখ ভার হতে শুরু করে। আচমকা শুরু ঝড়। সঙ্গে হালকা বৃষ্টি। মানিকচক, পুরাতন মালদহ, রতুয়া, কালিয়াচক, হবিবপুর, বামনগোলা, ইংরেজবাজার ব্লক এলাকায় ঝড় হলেও বৃষ্টির দাপট ছিল কম। বরং চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল বেশি। তবে দশ থেকে পনেরো মিনিটেই সব থেমে যায়। আকাশ অবশ্য মেঘলা রয়েছে। আমচাষি সইফুল ইসলামের কথায়, ‘‘ঝোড়ো হাওয়ায় টপাটপ আম পড়েছে। সারা দুপুর আম কুড়িয়েছি। কোমর ব্যথা হয়ে গেল।’’
রায়গঞ্জ
দুপুর ২টো থেকে প্রায় আধঘণ্টা ধরে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকে ঝড় ও বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি চলাকালীন রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ ও ইটাহার-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। রায়গঞ্জে শিলাবৃষ্টির জেরে বিভিন্ন রাস্তা সহ নানা এলাকায় শিলা জমে সাদা হয়ে যায়। ঝড়বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী তার ছিড়ে যাওয়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত রায়গঞ্জে লোডশেডিং ছিল। লোডশেডিংয়ের জেরে সমস্যায় পড়েছেন শিল্পীরাও। সঙ্গীতশিল্পী কমল নাগ বলেন, ‘‘বিকেল থেকে একটার পর একটা অনুষ্ঠান ছিল। লোডশেডিং চলতে থাকায় সন্ধে পর্যন্ত কোনও অনুষ্ঠানই শুরু হল না। সব শেষ করতে হলে বাড়ি ফিরতে মাঝরাত হয়ে যায়।’’
নাগরাকাটা
আধঘণ্টার ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জলপাইগুড়ির নাগারাকাটার লুকসান পঞ্চায়েতে৷ এ দিন ভোর রাতে ওই এলাকায় আচমকাই প্রবল ঝড় শুরু হয়৷ সেইসঙ্গে হয় শিলাবৃষ্টি৷ লুকসান বাজার, গ্রাস মোড় এলাকা-সহ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দেড়শো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়৷ মারা পড়েছে অনেক পাখিও৷ ক্যারন স্টেশনে একটি শেড উড়ে গিয়েছে৷ এলাকার এক বাসিন্দা জানান, অনেক বাড়ির চাল ফুটো হওয়ার সঙ্গে ঝড়ে অনেকের চাল উড়েও গিয়েছে৷ ঝড়ের জেরে অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে৷ বর্ষবরণের অনু্ষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ঝড়ের খবরাখবর নিতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন এলাকার বিধায়ক শুক্রা মুন্ডা। তিনি বলেন। ‘‘ফোন করে সব গ্রামে খবর নিয়েছি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ত্রাণবিলির তদারকি করেছি। সে সব সামলে অনেককেই শুভ নববর্ষ জানানো হল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy