বিভিন্ন সময়ে জলপাইগুড়ি স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নানা বয়সের শিশুদের। কখনও কখনও স্টেশন চত্বর থেকে অন্তঃসত্ত্বা ভবঘুরে মহিলাদেরও নিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ ব্যাপারে মাথা ঘামায়নি রেল। কিন্তু এ বার শিশু পাচার কাণ্ডে বারবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের নাম উঠে আসায় তথ্য জোগাড়ে উদ্যোগী হল রেল কর্তৃপক্ষ।
গত পাঁচ বছরে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে কত মহিলা এবং শিশু উদ্ধার হয়েছে? উদ্ধারের পর তাদের কোথায় রাখা হয়েছিল? ওই মহিলা এবং শিশুরা এখন কোথায় রয়েছে? এই সব তথ্য পেতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে চিঠি পাঠাল রেল। জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিঙের শিশু কল্যাণ সমিতিকেও চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীল বলেন, ‘‘নানা ভাবে এনজেপির নাম জড়াচ্ছে। তাই আমরা প্রকৃত তথ্য জানতে চেয়েছি।’’
জলপাইগুড়ির হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীকে শিশু বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতারের পর সিআইডি জানায় এনজেপি স্টেশন থেকে বহু ভবঘুরে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বিভিন্ন সময়ে চন্দনার হোমে পাঠানো হয়েছে। এক-দেড় বছরের শিশুও প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্ধার দেখিয়ে হোমে পাঠানো হয়েছে। এই তথ্য সামনে আসার পরেই রেল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরে প্ল্যাটফর্মে মহিলা-শিশু সুরক্ষার নামে অনিয়ম চলেছে। সে কারণেই এ বার যাবতীয় তথ্য জোগাড় করতে উদ্যোগী হয়েছে তারা।
সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারের এক দম্পতি জলপাইগুড়িতে এসে দাবি করেছিলেন এনজেপি স্টেশন থেকে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা তাঁদের কোল থেকে সদ্যোজাতকে ছিনিয়ে জলপাইগুড়ির হোমে পাঠিয়ে দেয়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগও জানিয়েছে ওই দম্পতি। তদন্তে সিআইডি জেনেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনজেপির প্ল্যাটফর্ম থেকে ভবঘুরে মহিলাদের শিশুদের কেড়ে নিয়ে চন্দনার হোমে পাঠাতো। শুধু তাই নয়, অন্য কোনও জায়গা থেকে শিশুদের এনেও এনজেপি স্টেশনে উদ্ধার বলে দেখানো হতো বলে অভিযোগ। সিআইডির দাবি, তাতে প্রত্যক্ষ মদত ছিল দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি দুই জেলার সাসপেন্ড হওয়া শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী সস্মিতার। মৃণাল-সস্মিতা একটি সংগঠনের হয়ে নিয়মিত এনজেপি স্টেশনে নানা অনুষ্ঠানও করতেন।
নিয়মানুযায়ী প্ল্যাটফর্ম থেকে শিশু উদ্ধার হলে রেলকেও জানাতে হয়। কিন্তু সরকারি ভাবে জানালে আগেই সত্যি সামনে এসে যেত সেই আশঙ্কায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সে নিয়মের পরোয়া করা হয়নি বলে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি। এ বার থেকে প্ল্যাটফর্মে কোনও শিশু উদ্ধার হলে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে বলে কড়া নির্দেশ জারি করছে রেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy