দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগে শিলিগুড়ির গিরিশ ঘোষ সরণির একটি আবাসনের ফ্ল্যাট ভাড়া থেকে এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা পুলিশ নিয়ে ওই আবাসনে যায়। আবাসন থেকে এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, মহিলার বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসার অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মহিলার মোবাইল থেকে বেশ কিছু নম্বর নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গিরিশ ঘোষ সরণির ওই আবাসনে এক মহিলা তাঁর সৎ বোনকে নিয়ে থাকতেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, মহিলা নিজের সৎবোনকেও জোর করে আটকে রেখেছিলেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগ, আবাসনের ওই ঘর থেকে দেহ ব্যবসার কাজ পরিচালনা করা হতো। বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা কিশোরীদের বিভিন্ন হোটেল, রিসর্টে পাঠানো হতো বলে অভিযোগ। ওই আবাসনে মাঝে মধ্যে কিশোরী বা তরুণীদের আসা যাওয়া করতে দেখা যেত বলে বাসিন্দাদের দাবি। এ দিন দুপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই আবাসনে গিয়ে হাজির হন। মহিলার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ উদ্ধার করে পুলিশ অফিসারদের দেখানো হয়। ওই মেসেজগুলি থেকেই কিশোরীদের বিভিন্ন ঠিকানায় পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া যায় বলে অভিযোগ।
এ দিকে, অভিযোগের খবর পেয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। শহরের মধ্যে বহুতল আবাসনের ঘর ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবস্যা পরিচালনা করার অভিযোগ ওঠায় বিস্মিত হয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ। আবাসনের কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, সপ্তাহখানেক ধরে অভিযুক্ত মহিলা ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেছিল। তার আগে সংহতি মোড় এলাকায় ওই মহিলা থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার সঙ্গে কাদের যোগাযোগ ছিল তাও বিশদে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মহিলা পরিবার নিয়ে থাকার কথা বলে মাসে প্রায় ছ’হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে এ দিন দুপুরে আবাসনে যান এলাকার কাউন্সিলর তথা পুরসভার ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুজয় ঘটকও। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকায় এমন অভিযোগ উঠতে পারে, তা ভাবতে পারিনি। তবে দ্রুত পাড়ায় একটি ক্যাম্প করে বাসিন্দাদের সচেতন করা হবে। পরিচয় পত্র থাকলেও, যথাযথ যাচাই না করে বাড়ি ভাড়া না দিতে অনুরোধ করব।’’
এ দিন অবশ্য আবাসনে পুলিশি অভিযানের সময় ওই মহিলা এবং তার বোন ছাড়া অন্য কেউ ফ্ল্যাটে ছিল না। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে রাকেশ গোয়ালা বলেন, ‘‘মহিলার বোনকে জোর করে বাড়িতে আটকে রেখেছে বলে আমরা খবর পাই। সেই মতো খোঁজখবর শুরু হয়। জানতে পারি, মহিলা দেহব্যবসা পরিচালনা করার কাজ করে। তারপরেই পুলিশকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে।’’ শিলিগুড়ি থানার আইসি অচিন্ত্য গুপ্ত জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলার অবশ্য দাবি, তিনি কোনও ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy