—ফাইল চিত্র
দার্জিলিং পাহাড়ে বরাবর প্রচলিত প্রজাপাট্টা। আদতে জমির মালিকানার সরকারি নথি হল প্রজাপাট্টা। এই প্রজাপাট্টাকে সামনে রেখেই পাহাড়ের পুরভোটে প্রথমবার মিরিক দখল করেছিল সমতলের দল তৃণমূল। এ বার পাহাড় জুড়ে পাট্টার দাবি জোরদার ভাবে তুলতে চলছে বিনয় তামাং, অনীত থাপাদের মোর্চা। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের একাংশের বৈঠকও হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, আগামী মাস থেকেই পাট্টা নিয়ে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন করে তোলা হবে দার্জিলিং পুরসভাকে কর্পোরেশন করার দাবিও। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই স্লোগান তুলে উন্নয়ন ও জমির পাট্টা দিয়ে বিমল গুরুংকে মোকাবিলার কৌশল নিতে চলেছে বিনয়পন্থীরা।
এ দিন শিলিগুড়ির নার্সিংহোম থেকে ফিরে বিনয় তো বটেই, জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপাও বৈঠকে ছিলেন। তবে রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে দু’জনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র কেশবরাজ পোথরেল শুধু বলেছেন, ‘‘প্রজাপাট্টা, কর্পোরেশনের মতো দাবি নিয়ে আমাদের কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। পাহাড় জুড়ে নানা প্রচার, সভা, বৈঠক চলবে। সময়মতো সব দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়া হবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শুধু মিরিক নয়, দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পঙের মত বহু পাহাড়ি এলাকায় জমির মালিকানা পাহাড়বাসীর কাছে নেই। বেশিরভাগ জমির মালিক চা বাগান কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, বন দফতর বা অন্য কোনও দফতর। গত কয়েক দশকে কোথাও লিজ়, কোথাও বা বসবাস করার ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড়ে বাড়িঘর, দোকানপাট, হোটেল গড়ে উঠেছে। জমির মালিকানা বা পাট্টার নথি বেশিরভাগ বাসিন্দারই নেই। বাগানের শ্রমিকেরা প্রায় ১১ হাজার একর জমিতে বসবাস করলেও তাঁদেরও জমির অধিকার নেই।
একই রকম অবস্থা বনবস্তি বাসিন্দাদের।
আলাদা রাজ্যের দাবির মতো পাহাড়বাসীর কাছে জমির পাট্টার বিষয়টিও খুবই সংবেদশনীল। মিরিকে ভোটে জেতার পর তৃণমূল বহু এলাকা ধরে ধরে পাট্টা বিলি করেছে। তাতে সেই সময় এলাকায় কম হলেও তৃণমূলের সংগঠন ভালই হয়েছে। পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন, গত ২১ অক্টোবর বিমল প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মোর্চা দুই শিবিরের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এক শিবির থেকে আর এক শিবিরে নাম লেখানো চলছে। দার্জিলিং সদরেও বিমল শিবিরে ফেরার ঘোষণা হয়েছে। সেখানে কার দিকে সংগঠনের ভার বেশি সেই লড়াই চলছে। এ বার তাই নিজেদের পুরনো অস্ত্র বা দাবিদাওয়াকে নিয়ে ময়দানে নামছেন বিনয়-অনীতেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy