নিহত: জয়শ্রী মুন্ডা
তখন দুপুর প্রায় দেড়টা৷ জলপাইগুড়ির বন দফতর অরণ্য ভবনে কর্মীরা কেউ কেউ তখন টিফিন করছেন৷ কেউ কাজ করছেন৷ আচমকাই চত্বরে ঢুকল একটি অ্যাম্বুলেন্স৷ ভেতর থেকে এক মহিলার মৃতদেহ নামিয়ে চিৎকার জুড়ে দিলেন সঙ্গে আসা মানুষজন। কাজ ফেলে বা টিফিন বাক্স গুটিয়ে ছুটে গেলেন কর্মীরা। হাতির হানায় মৃত্যুর পরও বন দফতর কোনও সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ তুলে বুধবার এ ভাবেই জলপাইগুড়ির বন দফতর অরণ্য ভবনে বিক্ষোভ দেখালেন বানারহাটের মোগলকাটা বাগানের বাসিন্দারা৷
সেই সময় দফতরে ডিএফও বা অন্য কর্তারা ছিলেন না৷ ফলে কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে সমস্যার পড়ে যান দফতরের কর্মীরা৷ শেষ পর্যন্ত দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কর্মীরা ওই বাসিন্দাদের দ্রুত আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘন্টা খানেক পর দেহ নিয়ে মোগলকাটা চা বাগানের উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা৷
মৃত জয়শ্রী মুন্ডা (৫৮) মোগলকাটা চা বাগানের ৪ নম্বর লাইনের বাসিন্দা৷ মঙ্গলবার রাতে পড়শির বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি৷ সেই সময় শুনতে পান এলাকায় হাতি বেরিয়েছে৷ দ্রুত বাড়ি ফিরে আসবেন বলে সেখান থেকে বের হন৷ কিন্তু রাস্তাতেই হাতির মুখে পড়েন৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথম বানারহাটের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে তাকে রেফার করা হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে৷ কিন্তু নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়৷
অভিযোগ, লাগোয়া মরাঘাট জঙ্গল থেকে মাঝে মধ্যেই ওই চা বাগান এলাকায় হাতি ঢুকে তাণ্ডব চালায়। অথচ, বন দফতরকে বারবার বলেও কোনও ফল হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা প্রসাদ টিগ্গার অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার রাতের ঘটনার পর আমরা কোনও প্রস্তুতি না নিয়েই জয়শ্রীকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দিই৷ পথেই তার মৃত্যু হয়৷ একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া ছাড়া আর কোনও সাহায্যই বন দফতর করেনি৷ এমনকী ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ সেলাই থেকে শুরু করে প্লাস্টিকও কিনতে হয়েছে টাকা জোগাড় করে।’’
তবে বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের বিট অফিসার গোপালচন্দ্র দে’র দাবি, মৃত্যুর পর প্রাথমিকভাবে যা যা সহায়তা করার তার সবটাই করা হয়েছে৷ মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণও পেয়ে যাবে৷ জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামীও বলেন, ‘‘ওই পরিবার যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ পায় তা দেখা হচ্ছে৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy