Advertisement
E-Paper

জেলের নিরাপত্তায় ক্ষোভ কর্মীদের

স্ক্যানার থাকলেও, তা পড়ে রয়েছে অব্যবহৃত অবস্থায়। আর তারই সুযোগ নিয়ে কখনও ফলের মধ্যে করে মোবাইলের সিম, কখনও বন্দিদের জুতো সুকৌশলে কেটে তার মধ্যে মোবাইল ফোন পাঠানো হচ্ছে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৫

স্ক্যানার থাকলেও, তা পড়ে রয়েছে অব্যবহৃত অবস্থায়। আর তারই সুযোগ নিয়ে কখনও ফলের মধ্যে করে মোবাইলের সিম, কখনও বন্দিদের জুতো সুকৌশলে কেটে তার মধ্যে মোবাইল ফোন পাঠানো হচ্ছে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। বছরের পর বছর ধরেই চলছে এমনটা৷ আর গোটা ঘটনার জন্য সংশোধনাগারের আধিকারিকদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছে কর্মী সংগঠনগুলি৷

গত মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আচমকা তল্লাশি অভিযানে এসে কারা দফতরের অ্যাডিশনাল আইজি কল্যাণ কুমার প্রামাণিক সংশোধনাগারের ভিতর থেকে ২৫টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেন৷ এছাড়াও সেখান থেকে উদ্ধার হয় চারশো গ্রাম গাঁজা, দড়ি ও ধারালো অস্ত্রও৷ সংশোধনাগারের ভেতরে এ ধরনের বেআইনি জিনিস ঢোকার পেছনে কর্মীদের একাংশও যে দায়ী, সে কথাও ওইদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন কারা দফতরের ওই কর্তা৷

এই ঘটনার পর জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ৷ সংশোধনাগারের তরফে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়েছে৷ কিন্তু এ সবে আদতে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সংশোধনাগারের কর্মী সংগঠনগুলি৷ কেউ কেউ তো আবার গোটা পরিস্থিতির জন্য জেল কর্তাদেরকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন৷ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের সংশোধনাগার শাখার জলপাইগুড়ি সার্কেল সম্পাদক অমিত দত্তর অভিযোগ, ‘‘এ ধরণের ঘটনা রুখতে সংশোধনাগারের কর্তাদেরও গাফিলতি রয়েছে৷ তাদের অনেকেই দিনে রাতে জেলের ভেতরে রাউন্ডে যান না৷ গোটা দায়িত্বই কারারক্ষীদের কাঁধে চাপিয়ে দেন৷’’ অমিতবাবুর আরও অভিযোগ, কলকাতার জেলগুলিতে সিসিটিভির ব্যবস্থা রয়েছে৷ কিন্তু জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে যে কোন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় দেরিতে৷

তাঁর অভিযোগ, সংশোধনাগারে একটি স্ক্যানার থাকলেও বছরের পর বছর ধরে তা অব্যাবহৃত অবস্থায় রয়েছে৷ ফলে অনেক সময় কলা, আপেল জাতীয় ফলের মধ্যে এমনভাবে মোবাইলের সিম কার্ড, কিংবা জুতো কেটে তার ভেতরে মোবাইল ফোন বা ব্যাটারি পুড়ে সংশোধনাগারের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে, যা ধরা পড়ছে না৷

বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতির নেতা লিপন করের অভিযোগ, ‘‘সব সময় খালি হাতে তল্লাশি করে সব কিছু ধরা সম্ভব নয়৷ এ জন্য যন্ত্রের প্রয়োজন৷ অথচ, গুরুত্বপূর্ণ এই সংশোধনাগারের স্ক্যানার কাজ করে না৷’’ মোবাইলের ব্যবহার রুখতে সংশোধনাগারে জ্যামার চালুরও দাবি তুলেছেন কর্মী সংগঠনের নেতারা৷

গত মঙ্গলবারের ঘটনার পর ইতিমধ্যেই নতুন দু’টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ৷ পুর্ত দফতরের কর্তারা এ জন্য এ দিন সংশোধনাগারেও যান৷ কিন্তু অভিযোগ, তারপরও সংশোধনাগারে অনেক ফাঁকফোকর রয়ে গিয়েছে৷ সংশোধনাগার থেকে বের হওয়া নালার লোহার শিকগুলিতে জং ধরে গিয়েছে৷ যে কোনও সময় সেগুলি ভাঙা বন্দিদের পক্ষে অসম্ভব নয় বলে মত কর্মীদের একাংশের৷

সংশোধনাগারের সুপার শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আধিকারিকদের গাফিলতির অভিযোগটি সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন৷ আধিকারিকরা নিয়মিত রাউন্ডে যান৷ প্রযুক্তিগত বিষয়গুলির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’

Security Prison
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy