Advertisement
E-Paper

উচ্ছেদ না তুললে বন্ধই হতে পারে রেল চলাচল

রেলপথ চলে গিয়েছে দখলের গ্রাসে। অবস্থা এমনই, দখল না সরালে ট্রেন চালানোই বন্ধ করে দিতে হবে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি জংশন পর্যন্ত রেলপথের এমন হালের কথাই উঠে এল খোদ রেলেরই সমীক্ষায়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১০
রেললাইনের ধার ঘেঁষে তৈরি হয়ে গিয়েছে দোকান। তাই কামরা প্রায় দোকানে লেগে যাওয়ার জোগাড়। — সন্দীপ পাল

রেললাইনের ধার ঘেঁষে তৈরি হয়ে গিয়েছে দোকান। তাই কামরা প্রায় দোকানে লেগে যাওয়ার জোগাড়। — সন্দীপ পাল

রেলপথ চলে গিয়েছে দখলের গ্রাসে। অবস্থা এমনই, দখল না সরালে ট্রেন চালানোই বন্ধ করে দিতে হবে।

নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি জংশন পর্যন্ত রেলপথের এমন হালের কথাই উঠে এল খোদ রেলেরই সমীক্ষায়। সাত কিলোমিটারের রেলপথের আশেপাশে অবৈধ দখলদারের সংখ্যা প্রায় বারো হাজার। এর মধ্যে অন্তত ৪ হাজার দখলের নির্মাণের সঙ্গে রেল লাইনের দূরত্ব মাত্র কয়েক ইঞ্চি। সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, এমন অবস্থায় ট্রেন চালানোই অত্যন্ত ঝুঁকির।

দ্রুত দখলদারি না সরালে ভবিষ্যতে ওই লাইনে ট্রেন চলাচলই সম্ভব হবে না বলে দাবি করেছেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আধিকারিকেরা। আপাতত ওই লাইনে মালগাড়ি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ, রেলের ডিআরএম পরিদর্শনে আসবেন শিলিগুড়িতে।

কেমন ছবি রেল লাইনের? লাইনের পাশে বসে গিয়েছে ঝুপড়ি। তৈরি হয়েছে কংক্রিট-কাঠের দোকানও। লাইনের পাশে ছাউনি তৈরি করে বাজারও বসেছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে চেন্নাইগামী এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যূত হয়ে যায় শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া মহাবীরস্থান উড়ালপুলের নীচে। তদন্ত করে রেল জানতে পারে, রেলের জমি দখল করে যথেচ্ছ নির্মাণে মাটি ঝুরঝুরে হয়ে গিয়েছে। তাতেই লাইন বসে যাওয়ায় চেন্নাই এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের সামনের দু’টি চাকা লাইন থেকে পড়ে যায়।

অবৈধ দখল না সরালে যে কোনও মুহূর্তে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। একদিনে রেলের জমি বেদখল হয়ে যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, প্রতিদিন একটু একটু করে জমি দখল হতে থাকলেও রেল কর্তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকলেন কেন? রেলের দাবি, দখলদার সরাতে ফের রাজ্য সরকারকে একপ্রস্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।

তবে দখলদারের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে তাতে চমকে গিয়েছেন রেলের কর্তারাও। দখলদারের জন্য রেলের বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ আটকে। শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে থমকে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি জংশন পর্যন্ত নতুন একটি রেলপথ তৈরির কাজও আটকে রয়েছে। টাউন স্টেশনে ঢোকা-বের হওয়ার জন্য নতুন লাইন বসানোর কথা থাকলেও দখলদারির জন্য সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি। সব মিলিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি ও লাগোয়া এলাকা। প্রায় দেড়শো কোটি টাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে শুধুমাত্র জমি দখলের জন্য।

রেলের জমি হলেও যেহেতু উচ্ছেদ্দ অভিযান শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে সে কারণে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা ছাড়া পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, গত চার বছর ধরে সহযোগিতা চেয়ে বারবার প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে রেলের জমি যে ভাবে বেদখল হচ্ছে তার সবটাই জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ চেন্নাই এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার পরে ঝুঁকির কথাও জানিয়ে দিয়েছে রেল। এখন অপেক্ষা রাজ্যের জবাবের।

Railway Shop
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy