অত্যাধুনিক শহর গড়তে চাই---কংগ্রেস ভেঙে বোর্ড দখলের পরে প্রথম পুরভোটে শক্তি পরীক্ষায় ওই স্লোগান হাতিয়ার করল তৃণমূল। অন্যদিকে, বিপন্ন গণতন্ত্র উদ্ধারের স্লোগান সামনে রেখে ঘাসফুল শিবিরকে ঘায়েল করতে ভোট যুদ্ধে প্রচারে নামল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার দুটি দল আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট প্রচার শুরু করে। এ দিন বিকেলে রবীন্দ্র ভবন থেকে বিরাট মিছিল নিয়ে শহর পরিক্রমা করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্যদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সভা করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
তবে স্লোগান যাই থাকুক আগামী পুরভোট যে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের কাছে সাংগঠনিক শক্তি যাচাই করে নেওয়ার পরীক্ষা সেটা অস্বীকার করছেন না দলীয় নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী এক ধাপ এগিয়ে বলেন, “এখানে তত্ত্ব কথার জায়গা নেই। যে জিতবে সেই রাজা। কংগ্রেস বোর্ড দখল করে দেখাক।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদারের পাল্টা দাবি, “জলপাইগুড়ি শহরের মাটি কংগ্রেসের। গত নির্বাচনে মানুষ কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভাঙিয়ে পুর বোর্ড দখলের ঘটনা যে শহরবাসী ভালভাবে নেয়নি তা প্রমাণ হবে।”
প্রচারে দাবি ও পাল্টা দাবির মূলে রয়েছে বিগত পুর বোর্ডের রাজনৈতিক বিন্যাসের পরিবর্তন। গত পুর ভোটে ২৫টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস দখলে যায় ১৬টি আসন। মোট ৬০ হাজার ৭০৭ ভোটের মধ্যে ওই দল পায় ২৪ হাজার ৩২৩ ভোট। অন্যদিকে ২৫টি আসনে প্রার্থী দিলেও মাত্র একটি আসন দখল করে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তৃণমূল শিবিরকে। তাঁরা ১২ হাজার ১৫৭ ভোট ঝুলিতে তুলে নেয়। কিন্তু গত বছর ১ জুলাই পুর বোর্ডের রাজনৈতিক বিন্যাস পাল্টে যায়। কংগ্রেস ভাঙিয়ে পুরসভার দখল নেয় তৃণমূল। প্রথমে পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু-সহ ছয়জন কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। পরে আরও তিনজন কংগ্রেস কাউন্সিলার তৃণমূলে যান। ওই দলের কাউন্সিলার সংখ্যা বেড়ে হয় ১০ জন। কংগ্রেসের কাউন্সিলার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭ জন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছেন ৯ জন কাউন্সিলারকে ভাঙিয়ে নিয়ে তৃণমূল কতটা লাভবান হয়েছে এই ভোটে সেটা স্পষ্ট হবে। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে কংগ্রেসের প্রভাব কতটা অটুট রয়েছে সেই ছবিও উঠে আসবে। প্রদেশ তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তাঁর কথায়, “এ বার ভোটে শক্তির যাচাই হবে এটা ঠিক। তবে বোর্ড তৃণমূল দখলের পরে কয়েক মাসে উন্নয়নের যে গতি এসেছে সেটাও তো মানুষ দেখেছে।”
কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, উন্নয়ন শহরের হয়নি। হয়েছে কয়েকজন ব্যক্তির। জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা বলেন, “মিথ্যা আশ্বাস ছাড়া এই শহর কিছুই পায়নি। বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে জবরদস্তি সংখ্যালঘু পুরসভাকে টিকিয়ে রেখে টাকা লুঠপাটের ব্যবস্থা করা হয় এখানে। গণতন্ত্রের সর্বনাশ হয়েছে। সেটা উদ্ধারের লড়াই এবারের নির্বাচন।” তিনি মনে করেন, ঘর ভাঙার খেলায় পুরসভা হাতছাড়া হতে বিপন্ন গণতন্ত্রের স্লোগান সামনে রেখে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস। ছিল বেহাল পরিষেবা, প্রতিশ্রুতি পালন না করার অভিযোগও।
তবে বাসিন্দারা বলছেন, বিভিন্ন পর্যায়ের ওই আন্দোলন শহরে কতটা প্রভাব ফেলেছে সেটা যাচাই হবে পুরভোটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy