চা বাগানগুলিতে রেশন দোকান চালু করবে খাদ্য সরবরাহ দফতর। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, উত্তরবঙ্গে ৪৪টি চা বাগানে খাদ্য দফতরের পরিচালনায় ওই রেশন দোকানগুলি গড়া হবে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে খাদ্য দিবস পালনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইতিমধ্যেই ধরণীপুর, কাঠালগুঁড়ি, ঢেকলাপাড়া, রেডব্যাঙ্ক, দলমোড় চা বাগানে ওই ধরনের রেশন দোকান তৈরি করা হয়েছে। এ দিন সেগুলির উদ্বোধনও করা হয় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চা বাগান কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রেশন বিলির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা নিয়মিত রেশন দিচ্ছেন না। কিছু দিন চালু রাখার পর বন্ধ করে দিচ্ছে। রেশন নিয়ে লুকোচুরি খেলছেন। চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের বাসিন্দাদের রেশনে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে খাদ্য দফতর নিজেই রেশন দোকান করবে।’’ খাদ্য দফতরের তৎপরতায় চা বাগানগুলিতে কোথাও অনাহার পরিস্থিতি নেই বলে তিনি দাবি করেন।
চা বাগানগুলিতে পরিবার পিছু প্রতি মাসে ৩৫ কেজি করে ২ টাকা কেজি দরে চাল, গম দেওয়া হয়। শুধু দোকান চালু করাই নয় বাগানগুলিতে বাসিন্দারা ঠিক মতো রেশন পাচ্ছেন কি না, তা দেখতে কয়েকটি চা বাগান নিয়ে এক জন করে ইন্সপেক্টর নিয়োগ করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
খাদ্যমন্ত্রী ছাড়াও খাদ্য দিবস পালনের অনুষ্ঠানে এ দিন উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জেমস কুজুর, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী। এ দিন, অনুষ্ঠানের পর চা বাগানের রেশন ব্যবস্থা নিতে তারা বৈঠকও করেন। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, ৫টি বাগানে ইতিমধ্যেই খাদ্য দফতরের তরফে রেশন দোকান চালু করা হয়েছে। বাকিগুলিতে সেই কাজ দ্রুত হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে প্রতিটি রেশন দোকান তৈরির জন্য ৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। রুগ্ন, পরিত্যক্ত, বন্ধ বাগানগুলিতে আগে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, চা বাগানের সমস্যা মেটাতে এদিন মন্ত্রীগোষ্ঠী তৈরি করেছে সরকার। তাতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী-সহ অনেকেই রয়েছেন। চা বাগানের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতি মাসে তাঁরা বৈঠক করবেন।
রেশন দোকানগুলির মাধ্যমে শুধু চাল, গম, আটা, চিনি সরবরাহ হবে না, সরষের তেল, হরলিক্স, পেস্ট, বিস্কুটের প্যাকেট সুলভে প্রতিটি রেশন দোকানে মিলবে। এ ধরনের মডেল দোকান ১২৭টি চালু করা হবে পুর এলাকাগুলিতে। পুর দফতরের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে খাদ্যমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, রেশনে সরবরাহ করা খাদ্য সামগ্রীর গুণমান পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গে গবেষণাগারও তৈরি করা হবে। কলকাতায় ইতিমধ্যেই তা তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া, কলকাতায় রাস্তার ধারে ফুটপাথে থাকা বাসিন্দাদের তথা ভিক্ষুকদের খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে রেশন কার্ড করে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতার পর রাজ্যের অন্যত্র জেলাতেও পরিষেবা দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy