মেট্রো রেলের দাবিতে জোট বাঁধছেন বাগডোগরার সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি আশায় বুক বাঁধছেন তাঁরা। কারণ তাহলে বৃহত্তর শিলিগুড়ির অংশ হয়ে যাবে বাগডোগরাও। তাই জনমত ক্রমশ প্রবল হচ্ছে বাগডোগরায়।
বিমানবন্দর থাকা সত্ত্বেও এখনও বাগডোগরা সেই পঞ্চায়েতের আওতায়। সরকারি ভাবে শহরের স্বীকৃতি মেলেনি। মেট্রোর সমীক্ষা শুরু হলে শহর হিসেবে স্বীকৃতি মেলাটা দ্রুততর হবে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। মেট্রোর প্রান্তিক স্টেশন হিসেবে বাগডোগরাকে বাছা হলে গুরুত্বের দিক দিয়ে অনেকটাই কুলীন হয়ে উঠবেন বলেও মনে করছেন তাঁদের অনেকেই। সে জন্য রেল মন্ত্রকের সঙ্গেও যোগাযোগ করবেন সাধারণ বাসিন্দা থেকে চা বাগান মালিক কিংবা এলাকার ব্যবসায়ীরা। প্রয়োজনে রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়েও কেন্দ্রের কাছে দরবার করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে।
গত কয়েক বছরে বৃহত্তর শিলিগুড়িতে যানজট সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। প্রতি বছর কয়েক হাজার করে শুধু প্রাইভেট গাড়ি ও বাইক বাড়ছে শহরে। এ ছাড়া লাগোয়া দার্জিলিং পাহাড়ের তিন মহকুমা ও সিকিম, নেপাল, ভুটান থেকে আরও কয়েক হাজার গাড়ি রোজ যাতায়াত করে শিলিগুড়ি শহরে। ফলে সমস্যা বাড়ছে। নতুন রাস্তা তৈরির জায়গা নেই। উড়ালপুল তৈরি করা যেতে পারে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, উড়ালপুলের জন্যও যে ন্যূনতম জায়গা দরকার, সেটাও শহরের বর্তমান পরিস্থিতিতে দুর্লভ। ফলে উত্তম বিকল্প হিসেবে মেট্রোর প্রস্তাব উঠে এসেছে সাধারণের কাছ থেকে। শুধু দাবি জানানোই নয়, কোন কোন রুটকে মেট্রোর গতিপথের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, তার একটা পরিকল্পনাও জানিয়ে দিয়েছেন বাগডোগরাবাসী।
বাগডোগরার বাসিন্দা, পেশায় স্কুল শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, শিলিগুড়িকে সচল রাখতে একমাত্র বিকল্প মাটির নিচের জায়গাকে কাজে লাগানো। তিনি বলেন, ‘‘শহরের ভূতল পরিবহণ ব্যবস্থায় উন্নতি করার অবকাশ কম। তা হলে গোটা শহরই সমস্যায় পড়বে। তাই মাটির তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ বানিয়ে মেট্রোই সব চেয়ে ভাল প্রস্তাব। আমরা এর সমর্থনে আন্দোলনে নামতে রাজি।’’ তাঁর মতে সকলেরই উচিত এই দাবিকে সমর্থন জানানো।
বাগডোগরার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বল আইচের দাবি, ‘‘মেট্রো রেল বাগডোগরা-সহ শিলিগুড়ির যান সমস্যার অনেকটা সমাধান করে দেবে। তাই এটা দ্রুত হওয়া জরুরি।’’
এই দাবিতে রেলমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তরাই ইন্ডিয়ান প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (টিপা)-র সম্পাদক উদয়ভানু দাস। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই আধুনিক শহর অত্যাধুনিক হোক। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেট্রো রেল অতি জরুরি একটি দাবি। এ নিয়ে রেল মন্ত্রকের কাছেও দরবার করব আমরা।’’ তাঁর দাবি, বাগডোগরা থেকে তিনবাতি শুধু নয়, উত্তরকন্যা বা ফুলবাড়ি সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চলুক।
আপার বাগডোগরার বাসিন্দা, গৃহবধূ সন্ধ্যামালতী করচৌধুরীর দাবি, মেট্রো হলে তা চলুক বেঙ্গল সাফারি পার্ক পর্যন্ত। তাতে বাইরে থেকে আসা পর্যটকেরাও সরাসরি সাফারি পার্কে চলে যেতে পারবেন।