Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ভাগ করে মিষ্টি খেল কোরক হোমের সবাই

কোরক হোমে প্রতি বছরই নিয়ম করে বেশি কিছু অনুষ্ঠান পালিত হয়৷ যার মধ্যে রয়েছে সরস্বতী পুজো, রাখি বন্ধন উৎসব, ইদ৷ হোম কর্তৃপক্ষের কথায়, হোমে যেমন নানা ধর্মের আবাসিক রয়েছে, তেমনই নানা সংস্কৃতি থেকে তারা উঠে এসেছে৷ তারপরও হোমে এক সঙ্গে থাকার সুবাদে একটা সময়ের পর তারা একই পরিবারের সদস্যদের মতোই মিলে মিশে কাটায়৷

 বন্ধন: কোরক হোমে আলিঙ্গন দুই আবাসিকের। নিজস্ব চিত্র

বন্ধন: কোরক হোমে আলিঙ্গন দুই আবাসিকের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ০২:১১
Share: Save:

সম্প্রীতির শুরুটা হয়েছিল রমজান মাসের শুরুতে৷ যা অব্যাহত থাকল ইদের দিনেও৷

সোমবার সকালে হোমেই নমাজ পড়ল একদল কচিকাঁচা৷ আরেক দল কচিকাঁচা তাদের নমাজ পড়া শেষ হতেই এগিয়ে গেল হাতে মিষ্টি ও আমের রস নিয়ে৷ আলিঙ্গনের মধ্য দিয়ে শেষ হল একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পালা৷ তারপর শুরু হল ভাগ করে মিষ্টি ও ফলের রস খাওয়া৷

ঠিক এ ভাবেই এ দিন সম্প্রীতির ইদে সামিল হল জলপাইগুড়ির কোরক হোমের শতাধিক আবাসিক৷ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে যেখানে ইদের খুশিতে এক সঙ্গে মেতে উঠল সকলে৷ বর্তমানে জলপাগুড়ির সরকারি এই হোমটিতে ১০৮ জন আবাসিক রয়েছে৷ যাদের প্রত্যেকেরই বয়স আঠারোর নীচে৷ এদের মধ্যে ১৮ জন আবার কিশোর অপরাধী৷ পাঁচ জন বাংলাদেশি কিশোরও রয়েছে হোমটিতে৷ হোমের জনা ২৫ আবাসিক এ দিন ইদের নমাজে অংশ নেয়৷ কিন্তু ইদের উৎসবে মেতে ওঠে গোটা হোমই৷

কোরক হোমে প্রতি বছরই নিয়ম করে বেশি কিছু অনুষ্ঠান পালিত হয়৷ যার মধ্যে রয়েছে সরস্বতী পুজো, রাখি বন্ধন উৎসব, ইদ৷ হোম কর্তৃপক্ষের কথায়, হোমে যেমন নানা ধর্মের আবাসিক রয়েছে, তেমনই নানা সংস্কৃতি থেকে তারা উঠে এসেছে৷ তারপরও হোমে এক সঙ্গে থাকার সুবাদে একটা সময়ের পর তারা একই পরিবারের সদস্যদের মতোই মিলে মিশে কাটায়৷

তবে এ দিনের ইদকে ঘিরে সম্প্রীতির এই ছবিটা কিন্তু প্রথম ফুটে উঠেছিল রমজান মাসের শুরুর দিনই৷ ওই দিন প্রথমবার হোমে বসেছিল দুই আবাসিকের উপনয়নের আসর৷ আর সেই সন্ধ্যাতেই হোমে হয়েছিল ইফতার পার্টি৷

হোমের এক কর্তা বলেন, ধর্মীয় ভেদকে দূরে রেখে ওই দিন থেকেই যারা রোজা রাখছিল, সন্ধ্যায় নামাজের পর তাদের ফল কেটে দেওয়া থেকে আমের রস তৈরি করায় এগিয়ে যাচ্ছিল আরেক দল কচিকাঁচা৷

কোরক হোমের হল ঘরে ইদের নমাজের আয়োজন করা হয়েছিল৷ সকাল বেলাতেই ঘুম থেকে উঠে পড়েছিল হোমের বাকি আবাসিকরাও৷ ওই ২৫ জনের নমাজ পড়ায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য খুঁটিনাটি অনেক বিষয়েই নজর রাখছিল বাকি আবাসিকরা৷

হোমের সুপার প্রণয় দে বলেন, ‘‘হোমের আবাসিকরা যে এখানে একটা পরিবারের মতো থাকে তা এ দিন তারা নিজেরাই ফের প্রমাণ করল৷’’

ইদ উপলক্ষে এ দিন দুপুরে কোরক হোমে স্পেশাল মেনুর আয়োজন করা হয়েছিল৷ বিকালে হয়েছিল সেমাইয়ের পায়েস৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE