Advertisement
E-Paper

আগুন লাগলে কী হবে, চিন্তায় গ্রন্থালয় কর্মীরা

যত্রতত্র ঝুলে রয়েছে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগের তার। তিনটি অগ্নিনির্বাপণ গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও সেগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। আশেপাশে জলের কোনও উত্স নেই। এই ছবি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের। দেড় বছর আগে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করেছে।

গৌর আচার্য

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৬
এ ভাবেই খোলা পড়ে থাকে বিদ্যুতের তার। — নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই খোলা পড়ে থাকে বিদ্যুতের তার। — নিজস্ব চিত্র।

যত্রতত্র ঝুলে রয়েছে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগের তার। তিনটি অগ্নিনির্বাপণ গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও সেগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। আশেপাশে জলের কোনও উত্স নেই।

এই ছবি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের। দেড় বছর আগে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করেছে। সরকারি নিয়মে এরপর কলেজের সাধারণ গ্রন্থাগারটিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হিসেবে নামকরণ করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই গ্রন্থাগারে অগ্নিনির্বাপণের পরিকাঠামো গড়ে না তোলায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে অধ্যাপক ও গ্রন্থাগারের কর্মীদের একাংশের মধ্যে। আতঙ্কিত পড়ুয়ারাও।

দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্রীর কথায়, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে অগ্নিনির্বাপণের ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই। প্রেসিডেন্সির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর পড়ুয়ারা গ্রন্থাগারে গিয়ে পড়াশোনা করতে আতঙ্কিত বোধ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি দেখা করতে চাননি। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পঙ্কজ কুণ্ডুর দাবি, আধুনিক অগ্নিনির্বাপণের সমস্ত পরিকাঠামো সহ ডিজিটাল ও কম্পিউটারাইজড একটি নতুন কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। খুব শীঘ্রই সেটি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ চালু হয়। গত প্রায় সাত দশক ধরেও কেন ওই গ্রন্থাগারে অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো গড়ে উঠল না, সেই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি পঙ্কজবাবু।

৩০ ফুট চওড়া ও ৫০ ফুট লম্বা এবং ৭৬ ফুট লম্বা দুটি ঘর নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি। সেখানে প্রাচীনকালের দুষ্প্রাপ্য পুথি, পত্রপত্রিকা, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের বিভিন্ন বিষয়ের ৫০ হাজার ১০২টি পাঠ্য ও রেফারেন্স বই রয়েছে। গ্রন্থাগারের রিডিং রুমে ১০০ জন পড়ুয়ার বসে পড়াশোনা করার ব্যবস্থা রয়েছে। আলমারি, র‌্যাক, বেঞ্চ, টেবিল ও চেয়ার মিলিয়ে লোহা ও কাঠের তৈরি ৫০টিরও বেশি আসবাবপত্র রয়েছে। গ্রন্থাগারে কর্মী রয়েছেন সাত জন। কর্মীদের একাংশের দাবি, ওই গ্রন্থাগারে প্রায় দু’বছর আগে তিনটি অগ্নিনির্বাপণ গ্যাস সিলিন্ডার লাগানো হলেও সেগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে! রেফারেন্স রুম ও বই রাখার ঘরে যত্রতত্র বিদ্যুত ও ইন্টারনেট সংযোগের তার। রিডিং রুমের বিদ্যুতের ওয়্যারিং জীর্ণ হয়ে গিয়েছে। বই ও কাগজের মতো দাহ্য বস্তুতে ঠাসা গ্রন্থাগারের আশপাশে জলের কোনও উত্স নেই। ফলে যে কোনও সময়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে অধ্যাপক, পড়ুয়া ও গ্রন্থাগারের কর্মীদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক দেবাশিস বিশ্বাসের দাবি, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় গত দেড় বছরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সহ বেশির ভাগ বিভাগেই অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। পড়ুয়া, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’

electric wire Raiganj University Fire Accident Short Circuit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy