খাবার নিয়ে সুকনা থেকে দার্জিলিঙের পথে। নিজস্ব চিত্র
নকশালবাড়িতে প্রতিরোধের মুখে অশান্তির ছক ভেস্তে গিয়েছে। এ বার শিলিগুড়িতে পাহাড়ের অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আন্দোলনকারীদের একটি গোষ্ঠী।
ওই গোষ্ঠীর অন্তত ১০০ জন বাছাই সদস্য-সদস্যা রাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে গোলমাল বাঁধানোয় সিদ্ধহস্ত বলে পুলিশ ও গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন। তাদের একাংশের শিলিগুড়িতে ঘনঘন আনাগোনার খবরও গোয়েন্দাদের কাছে পৌঁছেছে। তাই গোটা শিলিগুড়ি শহরে বাড়তি সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য সরকার।
আজ, রবিবার থেকে শিলিগুড়ির বেশ কয়েকটি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ। তবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ত্রিলোক রোকা জানান, তাঁরা কোনও অশান্তির পথে হাঁটেন না। তবে পাহাড়ের মতো সমতলের তরাই ও ডুয়ার্সেও তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটিং-মিছিল করার চেষ্টা করবেন বলে মোর্চা নেতারা জানিয়েছেন।
শনিবার পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলে কিছু বলার নেই। কিন্তু, গোলমাল বাঁধানোর ছক কষা হতে পারে বলে খবর আছে। স্পষ্ট আশঙ্কা থেকেই সতর্কতা জারি হয়েছে। গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’ তাঁর কথায়, যে সব জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে, সেখানে একযোগে ৪-৫ জন দলবদ্ধ হয়ে ঘোরাফেরা করলেই গ্রেফতার করা হতে পারে।
শুধু তাই নয়, শহরের প্রতিটি থানা এলাকায় গত জুন-জুলাই মাস থেকে কে বা কারা বাড়ি ভাড়া নিয়েছে, সেই তথ্যও থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। কারণ, তাঁর কাছে খবর, পাহাড়ে নানা মামলায় অভিযুক্তদের কয়েক জন শিলিগুড়ি, ভক্তিনগর, প্রধাননগর, মাটিগাড়া এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছেন। পাহাড়ের একাধিক বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ঘর ভাড়া নিয়ে তা ব্যবহার করছেন ওঁরা।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক বাড়ি, ফ্ল্যাটের মালিককে ভাড়াটের সচিত্র পরিচয়পত্র রাখতে হবে। তা পুলিশ সংগ্রহ করবে। ওই ভাড়াটের ঘরে স্থায়ী ভাবে কেউ থাকতে শুরু করলে, সেটাও বাড়ির মালিককে খেয়াল রাখতে হবে।’’
শিলিগুড়ির কাউন্সিলরদেরও অনেকেই উদ্বিগ্ন। কেউ কেউ জানান, জুলাই মাসের মধ্যেই শিলিগুড়ি, প্রধাননগর ও মাটিগাড়া থানা এলাকায় ঘর ভাড়ার চাহিদা মারাত্মক বেড়েছে। শিলিগুড়ির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘ভাড়া নিয়ে শান্তিতে কেউ থাকতে চাইলে আপত্তি নেই। অশান্তি বাঁধালে প্রতিরোধ হবে।’’
অশান্তি ঠেকাতে তৈরি শহরের নাগরিকেরাও। শিলিগুড়ির একটি নাগরিক সংগঠনের মুখপাত্র তথা আইনজীবী রতন বণিক জানান, পাহাড়ের ধাঁচে শহরে গোলমাল করলে নাগরিকরা দল বেঁধে তা রুখতে তৈরি। তিনি বলেন, ‘‘ক’দিন আগে নকশালবাড়িতে ব্যবসায়ী-বাসিন্দাদের প্রতিরোধের মুখে খুকুরি মিছিলের চেষ্টা ভেস্তে গিয়েছে। এ বার শহর অশান্তি রুখতে জোট বেঁধেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy