Advertisement
E-Paper

দিনমজুরি করেও সফল

পড়ার খরচ জোগাতে কখনও সিমেন্ট বালি পাথর মেখে মাথায় করে বয়েছে। কখনও আবার অন্যের খেতে আলু পটল চাষ করেছে মেধাবী পড়ুয়া শ্যামা রায়। কিন্তু পড়াশোনার সঙ্গে কোনও আপস করেনি সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা ওই ছাত্র। আলিপুরদুয়ার এক ব্লকের শালকুমার হাট গ্রামের লালটুরাম হাইস্কুলের ছাত্র শ্যামা উচ্চমাধ্যমিকে ৪০৬ পেয়েছে। দিনমুজুর পরিবারের ছেলে। বাবা কাজের জন্য ভিন রাজ্যে গিয়েছে, সংসার চালাতে দিন মজুরি করেন মা ও ছেলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০২:১২

পড়ার খরচ জোগাতে কখনও সিমেন্ট বালি পাথর মেখে মাথায় করে বয়েছে। কখনও আবার অন্যের খেতে আলু পটল চাষ করেছে মেধাবী পড়ুয়া শ্যামা রায়। কিন্তু পড়াশোনার সঙ্গে কোনও আপস করেনি সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা ওই ছাত্র। আলিপুরদুয়ার এক ব্লকের শালকুমার হাট গ্রামের লালটুরাম হাইস্কুলের ছাত্র শ্যামা উচ্চমাধ্যমিকে ৪০৬ পেয়েছে। দিনমুজুর পরিবারের ছেলে। বাবা কাজের জন্য ভিন রাজ্যে গিয়েছে, সংসার চালাতে দিন মজুরি করেন মা ও ছেলে।

জলদাপাড়া লাগোয়া লালটুরাম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রাণতোষ পাল বলেন, “শ্যামা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতে বাংলায় ৮১, ইংরেজিতে ৮৩, ভূগোলে ৭৭, দর্শনে ৯০ সংস্কৃততে ৭৫ ও এডুকেশনে ৫৮ নম্বর পেয়েছে। ছেলেটি আরো পড়তে চায়। আমরা উচ্চমাধ্যমিকে ওকে সাহায্য করেছি। ওদের পারিবারিক অবস্থা ভালো নয়।”

স্কুলের কাছেই দরমার বেড়া দেওয়া দুটি ছোট ও একটি পুরোনো টিনের ছোট ঘরে শ্যামা, তার মা, এক দাদা ও দুই দিদি থাকে। পাশে ইন্দিরা আবাসের নতুন ঘর তোলার কাজ চলছে। শ্যামার মা ফুলতি রায় বলেন, “ওর বাবা দীনেশ রায় ছেলে মেয়েদের পড়ার খরচ জোগাতে ভিন রাজ্যে গিয়েছেন শ্রমিকের কাজ করতে। দুই ছেলে, দুই মেয়ে। কষ্ট করে বড় ছেলেকে বিএ পাশ করিয়েছি। দুই মেয়েও এবার বিএ ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে। শ্যামাও ভালো ফল করেছে। ও আরও পড়তে চায়।’’ পরিবার সূত্রে জানা গেল, দীনেশবাবু মাসে ৩ হাজার টাকা পাঠায়। ফুলতি দেবীর কথায়, ‘‘আমরা সবাই দিন মজুরি করি। কাজ না করলে খাওয়া নেই। কি ভাবে শ্যামাকে পড়াবো বুঝতে পারছিনা। ও পড়ার ফাঁকে দিন মজুরিও করে।”

বাড়িতে মায়ের পাশে বেঞ্চে বসে শ্যামা রায় বলেন, “স্কুলের শিক্ষকরা ছাড়াও কর্মী ভজন বিশ্বাস ইংরেজি পড়তে সাহায্য করেছে। আগামী দিনে আমি ইংরেজিতে অর্নাস নিয়ে পড়তে চাই। যতদূর সম্ভব আমি পড়তে চাই। সাহায্য পেলে ভালো হয়। না হলে গায়ে গতরে খেটে পড়ে যাব। তবে তা কতদিন পারব জানি না। আলিপুরদুয়ার কলেজ, ফালাকাটা কলেজ ও কোচবিহার কলেজে ভর্তির চেষ্টা করব। যেখানে সুযোগ পাব ভর্তি হব।’’ বই কেনা, কলেজে যাতায়াতের খরচও বেশি। সেই খরচ কী ভাবে জোগাড় হবে সেটাই এখন চিন্তা শ্যামার।

poor alipurduar school HS result 2015
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy