একলাইনের এসএমএসটা পেয়ে আবেগে কয়েক মুহূর্ত কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মনে পড়ে গিয়েছিল, ছাত্রাবস্থায় পাড়ার পুজো মণ্ডপে কাপড়ে লেখা দাবি-পোস্টার। মনে পড়ে গিয়েছিল, বাবার লেখা সেই দু’টি লাইন, ‘কন্ঠে মোদের সুরের জোয়ার / জেলার নাম আলিপুরদুয়ার’।
বাবার মতো আমারও স্বপ্ন ছিল, আলিপুরদুয়ার জেলা হবে। লোকসভা ভোটের দিন কয়েক পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো এসএমএসে লেখা ছিল, ‘সৌরভ, তোমার স্বপ্ন এ বার পূরণ হবে।’ সে দিন মা-কে নিয়ে দার্জিলিং রওনা দিচ্ছিলাম, মাঝ পথে এক বিধায়কের ফোন। ফোনের ওপারে মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘‘নতুন জেলা করে দিয়েছি। এখনই আলিপুরদুয়ারের সকলকে জানিয়ে দে।’’ মনে হয়েছিল বাবা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন সার্থক হওয়ার বার্তা পৌঁছেছে আমার মাধ্যমে। সঙ্গে মনে পড়েছিল, এক দিন শুধু মাত্র জেলা হাসপাতালের পরিপাঠামো না থাকায় বিনা চিকিৎসায় বাবার মৃত্যু হয়েছিল আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে।
জেলা হওয়া নিয়ে অনেকটা আবেগ এবং এত দিন পৃথক জেলা না হওয়া নিয়ে এতটাই অভিমান গেঁথে রয়েছে মনে। এক সময়ে আলিপুরদুয়ার মানেই ছিল চা বাগান, রেলের সদর। বাগানের বাবু-কর্মীরা আলিপুরদুয়ারের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছিল, রেলের আনাগোনা সেই অর্থনীতিকে উত্থান দিয়েছিল। কিন্তু ২০০০ সাল থেকে শুধুই মন্দার ছবি।
বাম আমলে একবার সিপিএম বাদে সব দল মিলে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। চার ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েও বুদ্ধবাবু দেখা করেননি। প্রচণ্ড অপমানিত হয়েছিলাম। সে দিন কিন্তু জেদ আরও বেড়ে গিয়েছিল। রাজনীতি প্রসঙ্গেই বলি, যে দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম, দলনেত্রী জানতে চেয়েছিল আমি কী চাই। বলেছিলাম, আমার স্বপ্ন আলিপুরদুয়ার জেলা। এখন শুধু বীরপাড়াতেই চারটি জল প্রকল্প হয়েছে। হাসপাতাল উন্নত হয়েছে। জেলার পরিকাঠামো গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে। জেলা ঘোষণার দ্বিবর্ষ পূর্তিতে ফের মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy