Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mask

‘মাস্ক পরেননি কেন’, হুঙ্কার মহিষাসুরের

করোনার প্রকোপ বেড়ে চলেছে কোচবিহারে। চার হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। অবশ্য সুস্থতার হারও ভালো। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য দফতর বার বার নিয়ম মেনে চলার আবেদন করছেন। মাস্ক না পড়লে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

সুমন্ত সাহা। নিজস্ব চিত্র

সুমন্ত সাহা। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৫৯
Share: Save:

কেনাকাটা সেরে বাজারের মোড়ে দাঁড়িয়ে গল্পে মেতেছিলেন কয়েকজন। একজনের মুখে মাস্ক নেই, একজনের মাস্ক বুক পকেটে ঝুলছে। একজনের মাস্ক গলায় ঝুলে। আচমকাই ‘হু হু হা হা’ করতে করতে তরোয়াল হাতে হাজির মহিষাসুর। বেজে ওঠে ঢাক। কেন মাস্ক পরেননি, তা জানতে চেয়ে হুঙ্কার ছাড়তে শুরু করে মহিষাসুর। মহালয়ার পর রবিবারের প্রথম বাজার। কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজারে খানিকটা লোক সমাগম হয়েছিল। মহিষাসুরের হুঙ্কার শুনে ভিড় জমতে শুরু করে। তারপরে মহিষাসুর শান্ত হয়ে সকলকে বোঝাতে শুরু করেন, ‘‘শুধু পুলিশ-প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য নয়, নিজেকে বাঁচাতেও মাস্ক পরতে হবে৷’’ যাদের মাস্ক ছিল না তাঁদের হাতে মাস্ক তুলে দেন। তার পরে আবার ছুটে যান অন্য পথে। ভিড় থেকে কয়েকজন বলেন, “পুজোর আমেজের সঙ্গে সচেতনতার পাঠও হল।”

এ ভাবেই এ দিন মহিষাসুর হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ালেন স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মী সুমন্ত সাহা। করোনা আবহে বিপদের খোঁজ পেলে এই সুমন্ত বার বার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ দিনও অসুরের বেশ ধরে খবর পান, একজন রোগী ডায়ালিসিস নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। মুখোশ, বেশভূষা খুলে, তরবারি বিছানায় রেখে ছুটে য়ান। এক ঘন্টা সেখানেই সময় দেন। ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা হলে সুমন্ত ফিরে এসে সেই পোশাক পড়ে বেড়িয়ে পড়েন। সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। সুমন্ত জানান, তাঁদের একটি নাটকের দল রয়েছে। সেখানকার সদস্যরা মিলেই এ দিনের পরিকল্পনা করেন। তিনি বলেন, “করোনা সম্পর্কে এত প্রচারের পরেও অনেকে মাস্ক ব্যবহার করেন না। অনেকে সঙ্গে রাখলেও মাস্ক ঠিক মতো ব্যবহার করেন না। তাঁদের আরও সচেতন করতে এই উদ্যোগ।”

করোনার প্রকোপ বেড়ে চলেছে কোচবিহারে। চার হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। অবশ্য সুস্থতার হারও ভালো। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য দফতর বার বার নিয়ম মেনে চলার আবেদন করছেন। মাস্ক না পড়লে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। তার পরেও অনেকে মাস্ক পড়ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। সুমন্ত শুরু থেকেই করোনা আক্রান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেখেছেন সকলকে কেমন অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। পানীয় জল, খাদ্যসামগ্রী হাতে তিনি নিজে পৌঁছে গিয়েছিলেন অনেকের বাড়িতে। স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মী হিসেবে দিনরাত এই কাজের মধ্যেই থাকেন। তাই মাস্ক হাতেও বেরিয়ে পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে নাট্যদল ‘অনাসৃষ্টি’র সদস্যেরাও ছিলেন। অসুরের বেশে যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন,ন সাড়া পড়ে গিইয়েছিল ভবানীগঞ্জ বাজারে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সবাই মিলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এই উদ্যোগ খুব ভাল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Awareness Mask
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE