দুপুরে রোদের তাপে মাথায় কাপড় ঢাকা দিতে হচ্ছে। শিলিগুড়িতে হস্তশিল্প মেলায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
পৌষের শুরুতে কলকাতাকে টপকে গেল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার! এমনকী, রায়গঞ্জ, বালুরঘাটও কলকাতাকে ছাপিয়ে গেল! অন্তত, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যাপারে। রাজ্য রাজধানীর সঙ্গে সমানে-সমানে পাল্লা দিল শিলিগুড়িও। তাতেই বড়দিনে পাহাড়-ডুয়ার্সে আগত দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অনেকেই চমকে গিয়েছেন। দিনের বেলায় হাফ সোয়েটার গায়ে দিলেও যে হারে ঘাম হচ্ছে তাতে অনেকে বিরক্তও। কেউ কেউ তো ঘোরা বাতিল করে গ্যাংটকের দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ, সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগ জানাচ্ছে, হালকা একটা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হাজির হওয়ায় সিকিমের উঁচু এলাকায় অল্পস্বল্প বৃষ্টি হচ্ছে। ঠাণ্ডাও পড়েছে।
সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বললেন, ‘‘পশ্চিমী ঝঞ্ঝা জোরদার না হলে জমিয়ে শীত পড়বে না। অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় নিয়মিত তুষারপাতও হবে না। যাই হোক আপাতত একটা হালকা ঝঞ্ঝা সিকিম-দার্জিলিং পাহাড়ের উপরে ঢুকতে শুরু করেছে। একেবারে দুর্বল না হলে দু-একদিনের মধ্যে হালকা বৃষ্টি পড়বে। ঠাণ্ডাও বাড়বে।’’
তবে তরাইয়ের সিলিগুড়ি, ডুয়ার্সের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও লাগোয়া কোচবিহারে তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা পড়বে কি না তা নিয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না আবহাওয়া বিভাগের কেউ-ই। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার জানান, কাশ্মীরের উপরে যে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রয়েছে তা উত্তরবঙ্গের আকাশে ঢুকলে তবেই শীত পড়তে পারে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘এবার জম্মু-কাশ্মীর বাদ দিয়ে গোটা ভারতেই এ সময়টায় তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত বেশি। মূলত জোরাল পশ্চিমী ঝঞ্ঝার অনুপস্থিতির জন্যই এমন হচ্ছে। এটুকু বলতে পারি, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আসবেই। কয়েকদিনের জনয হলেও জাঁকিয়ে শীত পড়বে। বৃষ্টিও হবে। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে এমনই মনে হচ্ছে।’’
বিরক্ত পর্যটকেরাও। যেমন, বড়দিন ডুয়ার্সে কাটাবেন বলে সেই জুলাই মাসে রিসর্ট ঠিক করেছিলেন বেসরকারি সংস্থার এক প্রথম সারির কর্তা ও তাঁর তিন বন্ধু। শুক্রবার ভোরে কলকাতা থেকে সরাসরি গাড়ি নিযে পৌঁছেছেন শিলিগুড়িতে। কিন্তু, ভরদুপুরে খেতে বেরিয়ে গরমে দরদর করে ঘেমেনেয়ে উঠেছেন প্রায় সকলেই। নেপালের কাঠমাণ্ডুর একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভুটানে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ফেরার সময়ে কোচবিহারের রাজবাড়ি, বক্সাদুয়ার হয়ে ফেরার পরিকল্পনায় এসেছেন। ওই দলের মুখপাত্র সুমের শ্রেষ্ঠা বললেন, ‘‘ঠান্ডা না হলে বেড়ানোর আনন্দটা পুরোপুরি উপভোগ করতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy