ক্রীড়া পরিষদের টিকিট কাউন্টারের বাইরে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ব্যারিকেড। দু’টি ব্যারিকেডের মাঝের গলি দিয়ে পৌঁছতে হবে স্টেডিয়ামে ঢোকার গেটের মুখে। কিন্তু ক্রীড়া পরিষদের কর্তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, এই বাঁশের ব্যারিকেড কত দূর পর্যন্ত তৈরি করলে দর্শকের লাইন সামাল দেওয়া যাবে। কারণ গত কয়েক দিন ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের আশপাশে কান পাতলে টিকিটের জন্য হাহাকার ছাড়া অন্য কিছু শোনা যাচ্ছে না।
প্রথম বার ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি আয়োজনে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেই চেষ্টায় এখন দিনরাত কার্যত এক হয়ে গিয়েছে ক্রীড়া পরিষদ কর্তা ও স্টেডিয়াম কমিটির সদস্যদের। কিন্তু তার চেয়েও বেশি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে টিকিটের আব্দার। কলকাতা থেকে দু’দলের কট্টর সমর্থকেরা তো আসছেনই, সঙ্গে ভাল সংখ্যায় যোগ দেবেন উত্তরবঙ্গের সমর্থকেরাও। ‘টিকিট না পেলে ফল ভাল হবে না’ গোছের হুমকিও ইতিমধ্যে দিয়ে রেখেছেন কোনও কোনও সদস্য বা শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের আজীবন সদস্য। দাবি একটাই, ‘কমপ্লিমেন্টারি’ টিকিট নেই।
এমনিতেই মাঠে বসে ডার্বি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ উত্তরবঙ্গের ক্রীড়াপ্রেমীরা। তার উপরে পারদ আরও চড়ছে আই লিগে হাড্ডাহাড্ডি পরিস্থিতির জন্য। মোহনবাগান আইজল এফসি-র কাছে হেরে যাওয়ায় ইস্টবেঙ্গল এই ডার্বি থেকে ফের লিগের দাবিদার হিসেবে জোরালো ভাবে উঠে আসার সুযোগ পাচ্ছে। মোহনবাগানের সামনে আবার লিগ টেবিলের এক নম্বর জায়গাটা ধরে রাখার লড়াই। ফলে, টিকিটের চাহিদা বাড়ছে হু-হু করে।
টিকিটের চাহিদার চাপ সামলাতে না পেরে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে উপায় বের করতে চাইছেন শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ কর্তারা। সোমবার রাতে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে টিকিটের বরাদ্দ বাড়ানো যায় কি না, তা নিয়ে ইস্টবেঙ্গল প্রতিনিধির কাছে সওয়াল করেন তাঁরা। তার যদিও আশার আলো দেখাতে পারেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। আজ, মঙ্গলবার থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
প্রথম দিন বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। পর দিন সকাল ১১টা থেকে ১টা এবং ৪টে থেকে ৬টা। আগে আরও কয়েক জায়গা থেকে টিকিট বিক্রি করা হতে পারে বলে ঠিক ছিল। কিন্তু কালোবাজারি রুখতে পরে ‘ওয়ান উইন্ডো’ পদ্ধতিতেই টিকিট বিক্রি হবে বলে ঠিক করে ক্রীড়া পরিষদ। পরিষদ সচিব তিনি জানান, গত চার-পাঁচ দিন ধরে দিনরাত ফোনে টিকিটের জন্য অনুরোধ আসছে। তিনি বলেন, ‘‘সকলেই ভাবছে আমার কাছে অনুরোধ করলেই টিকিট পাওয়া যাবে। কিন্তু টিকিট তো সীমিত। এর মধ্যে যত ফোন আসছে তার অর্ধেকের বেশি লোককে আমি সন্তুষ্ট করতে পারব না। অথচ সরাসরি না-ও বলা যাচ্ছে না।’’ টিকিটের চাহিদা কেমন, তা এই ক’দিনে ক্রীড়া পরিষদ চত্বরে গেলেই টের পাওয়া যাচ্ছে।
ভেতরে এত চাপ থাকলেও হাবেভাবে অবশ্য ফুরফুরে থাকার চেষ্টা করছেন সকলেই। তার মধ্যেই সোমবার সকালের বৃষ্টিতে মাঠ ভিজে নরম হয়ে যাওয়ায় খুশি ইস্টবেঙ্গল প্রতিনিধি অরুণাভ ভট্টাচার্য।
শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতন ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন মাঠ ঘুরে দেখার পরে তিনি বলেন, ‘‘ঘাস ভিজে নরম হয়ে যাওয়ায় বল প্লেয়ারদের সুবিধে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। হাতে আরও কয়েকটা দিন রয়েছে। তার আগেই মাঠ ম্যাচের জন্য একেবারে তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’ এখান থেকে পুরো পয়েন্ট নিতে পারলে লিগের দৌড়ে ফের চলে আসবে ইস্টবেঙ্গল। তাই তাগিদটা বোধহয় তাদের দিক থেকে একটু বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy