Advertisement
০২ মে ২০২৪

কলেজের গাফিলতির অভিযোগ, বছর নষ্টের মুখে ছাত্রী

পরীক্ষার অনেক আগেই অ্যাডমিট কার্ড কলেজে পৌঁছে গিয়েছে৷ অথচ বারবার কলেজ কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েও পরীক্ষার আগে তা হাতে পেলেন না এক ছাত্রী৷ আর যখন তা তার হাতে এলো, তখন পরীক্ষা শেষ হয়ে আঠারো দিন কেটে গিয়েছে৷ সঠিক সময়ে ফর্ম ভর্তি করেও অ্যাডমিট কার্ড হাতে না পাওয়ায় তাই পরীক্ষাই দিতে না পারলেন না ওই ছাত্রীটি৷

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৭
Share: Save:

পরীক্ষার অনেক আগেই অ্যাডমিট কার্ড কলেজে পৌঁছে গিয়েছে৷ অথচ বারবার কলেজ কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েও পরীক্ষার আগে তা হাতে পেলেন না এক ছাত্রী৷ আর যখন তা তার হাতে এলো, তখন পরীক্ষা শেষ হয়ে আঠারো দিন কেটে গিয়েছে৷

সঠিক সময়ে ফর্ম ভর্তি করেও অ্যাডমিট কার্ড হাতে না পাওয়ায় তাই পরীক্ষাই দিতে না পারলেন না ওই ছাত্রীটি৷ যার জেরে কলেজ কর্তৃক্ষের একাংশের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠল৷ ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি পি ডি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে৷ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কলেজের কয়েকজন কর্মী বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীটি৷ অধ্যক্ষও গোটা ঘটনায় কলেজের গাফিলতির কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন৷ একই সঙ্গে তাঁর কথা, ‘‘নতুন করে ওই ছাত্রীর পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করা আর সম্ভব নয়৷’’

দোমহনির বাসিন্দা কাকলি মল্লিক নামের ওই ছাত্রীটি জলপাইগুড়ি পি ডি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে বি এ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী৷ দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার জন্য তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার পাশাপাশি দ্বিতীয় বর্ষের ওই বিষয়টিতে পরীক্ষার জন্য গত ২২ফেব্রুয়ারি ফর্ম ভর্তি করেন৷ এরপর তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড নির্দিষ্ট সময়ে হাতে পেয়ে গেলেও দ্বিতীয় বর্ষের একটি বিষয়ের অ্যাডমিট কার্ডটি নিয়েই সমস্যা শুরু হয়৷ ওই ছাত্রীর অভিযোগ, “দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড কলেজে এসে চাইলে আমায় বলা হয় আমি নাকি ফর্মটাই ভর্তি করিনি৷ তাই আমার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি৷ কিন্তু আমি যে ফর্ম ভর্তি করেছি তার প্রমাণ হিসাবে ফর্ম ভর্তির সময় যে টাকা জমা দিতে হয়, সেই রসিদ কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেখাই৷ কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের দাবিতেই অনড় থাকেন৷ এ ভাবে চলতে চলতে গত ১৪ জুন দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাও শেষ হয়ে যায়৷ এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ আমায় ফর্ম ভর্তির টাকা নিয়ে যেতে বলেন৷ সেই মতো গত শুক্রবার কলেজে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার হাতে টাকার বদলে অ্যাডমিট কার্ডটা তুলে দেন৷”

ছাত্রীর বাবা স্বপনকুমার মল্লিকের অভিযোগ, “কলেজ কর্তৃপক্ষ আমায় জানিয়ে দিয়েছেন, অ্যাডমিট হাতে পেলেও এ বছর আর মেয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পরীক্ষাটি দেওয়া সম্ভব না৷ কারণ পরীক্ষাটা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে৷ ফলে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় মেয়ে যদি পাশও করে তাহলে ওই একটি পরীক্ষার জন্য তাকে আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হবে৷ এই এক বছর সময় নষ্টের জন্য যারা দায়ি আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই৷”

কলেজের অধ্যক্ষ শান্তি ছেত্রী অবশ্য গোটা ঘটনায় কলেজের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, “প্রথম দফায় নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ওই ছাত্রীটি ফর্ম ভর্তি না করলেও পরের তারিখে করেছিল৷ সে জন্য একটু দেরিতে হলেও পরীক্ষার আগেই সেই অ্যাডমিট কার্ডটিও কলেজে এসেছিল৷ কিন্তু আমাদের তরফেই একটা গাফিলতি হয়েছিল, যার জন্য তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অ্যাডমিট কার্ডটি পেলেন না৷” যে সব কর্মীর গাফিলতির জেরে এই ঘটনা, তাঁদের শাস্তি হবে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে না বললেও অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, আগামী দিনে যাতে এই ধরনের গাফিলতি কলেজে না হয়, তা তিনি দেখবেন৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri P.D. Women's College Negligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE