উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়ার বিষয়ে সম্প্রতি বিধানসভায় উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দেওয়া তথ্য নিয়ে ‘বিভ্রান্ত’ শিক্ষক, পড়ুয়ারা। মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট চালাবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় ৬৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তিনি জানান, উচ্চ শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যেই প্রায় ১৮ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে। প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজ ৯৭ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রীর এই বক্তব্যের কিছুই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলছে না। তাতে প্রশ্ন উঠেছে, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীকে ‘অন্ধকারে রেখে’ বা ‘ভুয়ো’ তথ্য দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে না তো? মন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার নয়। তাই বলতে পারছি না।’’
সম্প্রতি বিধানসভায় শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে ওই হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়ার প্রসঙ্গে সরকারের ভাবনাচিন্তা, জমি দেওয়াটা জরুরি কি না জানতে চেয়েছিলেন। তার উত্তরেই উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘বিষয়টি হোটেল ম্যানেজমেন্ট। তার জন্য কী হচ্ছে সেটা বিস্তারিত বলছি। মোট খরচ করা হচ্ছে ৬৩ কোটি ২৫ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯৪১ টাকা। ১৮ কোটি ৩২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ইতিমধ্যেই উচ্চ শিক্ষা দফতর অনুমোদন করেছে। পুরোটাই সরকারি প্রকল্প। এখানে বেসরকারি কোনও কোর্স খোলা, পিপিপি মডেলে কিছু করা বা কোনও হোটেল খোলার সম্ভাবনা নেই।’’
তার পরেই ওই হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ইতিমধ্যে অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজে ৯৭ শতাংশ ইতিমধ্যেই অগ্রগতি হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চালাবে। জমিটা পর্যটন দফতরকে হস্তান্তর করা হচ্ছে, যাতে পর্যটন এবং উচ্চ শিক্ষা দফতর একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারে। পাহাড় এবং সমতলের উৎসাহীরা ওই কোর্স করতে পারেন। সরকারি প্রকল্প, সরকারি জায়গায় করা হচ্ছে।’’ অথচ, কর্মসমিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ একর জায়গা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত সবে হয়েছে। কোনও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বারবার জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের ইনস্টিটিউট চালাতে পারে না। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কেটারিং টেকনোলজির নিয়ম মেনে কোনও ‘সোসাইটি’ তা চালাবে।
শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়ে উঠছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। উপাচার্যের মেয়াদ কি এই হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়ার উপরে নির্ভর করছে? না হলে কেন তাঁকে এর জন্য আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে?’’ এ দিন ‘উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও মঞ্চ’-এর তরফে জমি হস্তান্তেরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে পথসভা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy