Advertisement
E-Paper

সকলকে ছাপিয়ে কৃতিত্ব বজায় সুনীতিবালা স্কুলের

সাফল্যের খতিয়ানে সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম প্রাচীন স্কুল সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এ বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার একশো শতাংশ। শুধু এ বছরই নয়, গত পাঁচ বছর ধরে এই স্কুলটি থেকে মাধ্যমিকে সমস্ত ছাত্রী পাশ করে আসছে। উচ্চমাধ্যমিকেও গত পাঁচ বছরে দুই বছরে পাশের হার ১০০ শতাংশ ছিল। প্রধানশিক্ষিকা এই সাফল্যের জন্য স্কুলের শিক্ষিকাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০২:১৭

সাফল্যের খতিয়ানে সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম প্রাচীন স্কুল সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এ বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার একশো শতাংশ। শুধু এ বছরই নয়, গত পাঁচ বছর ধরে এই স্কুলটি থেকে মাধ্যমিকে সমস্ত ছাত্রী পাশ করে আসছে। উচ্চমাধ্যমিকেও গত পাঁচ বছরে দুই বছরে পাশের হার ১০০ শতাংশ ছিল। প্রধানশিক্ষিকা এই সাফল্যের জন্য স্কুলের শিক্ষিকাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

স্কুল সূত্রে জানা যায় যে, এ বছর মাধ্যমিকে ২০৫ জন এবং উচ্চমাধ্যমিকে ১৫০ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। তারা সবাই পাশ করেছে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০১৪ সালে ১৮৯ জন, ২০১৩ সালে ১৮৫ জন, ২০১২ সালে ১৮৩ জন, ২০১১ সালে ১৬১ জন, ২০১০ সালে ১৭২ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। গত পাঁচ বছরে তারা সবাই প্রতি বছর পাশ করেছে। উচ্চমাধ্যমিকে এ বছর ছাড়াও ২০১২ এবং ২০১৪ সালে সবাই পাশ করেছিল। যেমন ২০১৪ সালে ১৪৮ জন এবং ২০১২ সালে ১৪১ জনএর মধ্যে সবাই পাশ করেছিল।

এই সাফল্যের উৎস কী? প্রধানশিক্ষিকা অপর্ণা বাগচি বলেন,“এই সাফল্যের জন্য স্কুলের শিক্ষিকাদের বিশেষ অবদান আছে। টেস্ট পরীক্ষায় কেউ খারাপ নম্বর পেলে তাদের অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে ছাত্রীর সামনে আলোচনা করা হয়। তার খারাপ নম্বর পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার ত্রুটিগুলো শুধরে দেন শিক্ষিকারা। এ ছাড়াও প্রতিটি ছাত্রীর প্রতি শিক্ষিকাদের আলাদা নজর আমাদের ধারাবাহিক সাফল্যের মূল কারণ।”

এ বছর সফল ছাত্রীদের মুখে প্রধান শিক্ষিকার কথার সমর্থন মিলেছে। এ বছর এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৬০ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারি সৃজা ভৌমিক বলেন, “স্কুলের শিক্ষিকারা নিয়মিত পড়ানো ছাড়াও আমাদের দিকে বিশেষ নজর দেন। কেউ কিছু বুঝতে না পারলে আলাদা ভাবে বুঝিয়ে দেন। বাড়িতে আমাদের অভিভাবকেরা যাতে আমাদের পড়াশোনার প্রতি নজর দেন সেটাও আমাদের স্কুলের পক্ষ থেকে দেখা হয়।”

এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪৭৫ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে অহীনা নন্দী। ৪৬৩ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছে সুশ্রুতি সরকার। সুশ্রুতি বলেন, “আমাদের স্কুলে মাধ্যমিক পর্যন্ত এমন ভাবে পড়ানো হয় যে কোনও গৃহশিক্ষক রাখার দরকারই হয় না। আমার নিজেরই অঙ্ক ছাড়া কোনও বিষয়ের গৃহশিক্ষক ছিল না। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময়েও থিওরিটিক্যাল এবং প্র্যাক্টিক্যাল দু’টিতেই আমরা শিক্ষিকাদের কাছ থেকে সমান সহযোগিতা পেয়েছি।”

১৮৭১ সালে স্থাপিত এই স্কুলটির একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। ১৮৬৯ সাল জালালুদ্দিন নামে এক যুবক ঢাকা থেকে পালিয়ে জলপাইগুড়িতে এসে আশ্রয় নেন। তাঁর অপরাধ ছিল তিনি ব্রাহ্ম সমাজের নেতা কেশবচন্দ্র সেনের বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাতে মুসলমান সমাজের রোষের মুখে পড়ে ঢাকা থেকে পালিয়ে তিনি জলপাইগুড়িতে এসে আশ্রয় নেন।

জালাল মিঞা এবং তাঁর স্ত্রীর উদ্যোগে এবং তৎকালীন জলপাইগুড়ি শহরের ব্রাহ্ম সমাজের সদস্যদের সহযোগিতায় নারীশিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে এই স্কুলটি স্থাপিত হয়। প্রথমে নাম ছিল জলপাইগুড়ি ইংরেজি বালিকা বিদ্যালয়। দীর্ঘ দিন প্রাথমিক স্কুল থাকার পর স্কুলটি ম্যাট্রিকুলেশন পর্যায়ে উন্নীত হয়। ১৯২৫ সালে স্কুলের দায়িত্ব ভার নেন স্বর্গীয় সুনীতিবালা চন্দ। তার পরেই যোগ দেন স্বর্গীয়া ঊর্মিলা রহমান। ১৯২৮ সালে এই স্কুল থেকে প্রথম তিন জন মহিলা ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাশ করেন। তার পর থেকে বহু কৃতি ছাত্রী এই স্কুল থেকে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে।

HS result 2015 jalpaiguri student english madhyamik exam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy