Advertisement
E-Paper

বোতলের জলে নজরদারি শুরু

মাটির নীচ থেকে জল তোলার অনুমতি রয়েছে বড়জোর ২০টি সংস্থার। কিন্তু প্রশাসনেরই হিসেবই বলছে, জেলা জুড়ে অন্তত এর দ্বিগুণ সংস্থা পানীয় জল সরবরাহের ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। তা হলে বাকি সংস্থাগুলি জল পাচ্ছে কোথা থেকে?

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৫

মাটির নীচ থেকে জল তোলার অনুমতি রয়েছে বড়জোর ২০টি সংস্থার। কিন্তু প্রশাসনেরই হিসেবই বলছে, জেলা জুড়ে অন্তত এর দ্বিগুণ সংস্থা পানীয় জল সরবরাহের ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। তা হলে বাকি সংস্থাগুলি জল পাচ্ছে কোথা থেকে? প্রশ্ন উঠেছে, বোতল বা ড্রামে ভরা যে জল পানীয় হিসেবে কিনছেন দার্জিলিং-শিলিগুড়ির বাসিন্দারা, তা কতটা নিরাপদ? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। এত দিন ছিল না কোনও নজরদারি ব্যবস্থাও। এই পরিস্থিতি বদলাতে এ বার তৈরি হচ্ছে প্রশাসন। সরকারি নির্দেশ, দার্জিলিং জেলায় পানীয় জল বিক্রি করতে হলে শুধুমাত্র বিভিন্ন সরকারি সংস্থার লাইসেন্স যথেষ্ট নয়। পার হতে হবে জেলা প্রশাসনের মানদণ্ডও।

জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের নির্দেশে শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে একাধিক পদস্থ কর্তাকে নিয়ে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। এই কমিটি জেলার সব সংস্থার বটলিং প্লান্ট পরিদর্শন করে পরিচ্ছন্নতা যাচাই করবে, সংগ্রহ করবেন জলের নমুনাও। হায়দরাবাদ-সহ দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত গবেষণাগারে নমুনা পাঠিয়ে রিপোর্ট সংগ্রহ করবে জেলা প্রশাসন। রিপোর্টে কোনও ঘাটতি অথবা ত্রুটি থাকলে সংস্থার প্লান্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দিন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে দার্জিলিং জেলার ‘ডিস্ট্রিক্ট লেভেল গ্রাউন্ড ওয়াটার অথরিটি’ কমিটির বৈঠক ছিল। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক, শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক, সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, পুরসভা, মহকুমা পরিষদের প্রতিনিধিরা।

ভূগর্ভ থেকে গভীর নলকূপের মাধ্যমে জল তোলার প্রক্রিয়ার উপরে নজরদারি চালাবে এই কমিটি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং জেলায় মাত্র ২০টি সরবারহকারী সংস্থার গভীর নলকূপ বসানোর অনুমতি রয়েছে। যদিও শিলিগুড়ি মহকুমায় অন্তত ৪০টি সংস্থা পানীয় জল সরবারহের ব্যবসা চালাচ্ছে বলে প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন সূত্রে তথ্য এসেছে। তারা জল পাচ্ছে কোথা থেকে? এখানেই অভিযোগের শেষ নয়। আরও অভিযোগ, কোনও সংস্থা কাজ চালাচ্ছে শুধুমাত্র পুরসভার ট্রেড লাইসেন্সে ভরসা করে, কারও সম্বল মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া কেন্দ্রীয় সংস্থার স্বীকৃতি শংসাপত্র। যে সংস্থার বৈধ নথিপত্র রয়েছে, তাদের প্লান্টের ভিতরে কী চলছে, তা দেখারও কেউ নেই। নজরদারির অভাবে নদী এমনকী, কুয়োর জলও বোতলে ভরে সিল করে সরবারহের অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়িতে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পানীয় জল সরবারহ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জলের প্লান্ট পরিদর্শন এবং সেখান থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জল সরবারহ করতে হলে ‘বিএসআই’ (ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড) চিহ্ন বাধ্যতামূলক। কিছু নির্দিষ্ট পরিকাঠামোগত শর্ত পূরণ করলেই এই স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব। তবে দৈনন্দিন যে পানীয় জল প্লান্টে বোতল বা ড্রাম-বন্দি করা হচ্ছে, তাতে কোনও নজরদারি নেই বলেই অভিযোগ। শিলিগুড়ি-দার্জিলিঙে বছরভর পর্যটক ভর্তি থাকে। বাসিন্দাদের মধ্যেও বিভিন্ন সংস্থা থেকে সরবারহ করা জল বাড়িতে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু যে জল বাড়িতে পৌঁছেছে, তা কি আদৌও পানের যোগ্য? এই প্রশ্ন ওঠায় এ বার কড়া ভূমিকা নিতে চাইছে প্রশাসন।

Bottle water Surveillance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy