সভায় সূর্য।—নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলকে হারাতে এবার গণতান্ত্রিক জোটে আগ্রহী সমস্ত রাজনৈতিক দলকে প্রয়োজনে ঝান্ডার রঙ ভুলে ভোটের লড়াইয়ে নামতে বললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সেই সঙ্গে কোনও আসনে যে দলের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে অন্য পক্ষের প্রার্থীকে বসে যেতে হবে বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে আয়োজিত কর্মী সভায় সূর্যকান্তবাবুর প্রায় এক ঘণ্টার প্রকাশ্য ভাষণের মূল নির্যাস ছিল মানুষের জোট গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, কলকাতায় আমরা কি বললাম কিংবা বড় নেতারা কী বললেন, সেটা না ভেবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের জোট গড়ে তুলতে হবে। সকলকে এককাট্টা হয়ে বুথ আগলানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘‘সেখানে কার হাতে কোন ঝান্ডা থাকলো বড় কথা নয়। ঝান্ডা ছেড়ে সকলে মিলে ভোট লুঠ রুখে দিন।’’
দক্ষিণ দিনাজপুরের ছ’টি বিধানসভা আসনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বামেরা চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দু’টি আসন বন্টন নিয়ে এখনও কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের আলোচনা জারি রয়েছে বলে দল সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতির কথা ভেবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্তবাবু প্রকাশ্য ভাষণে বলেন, ‘‘আসন নিয়ে নেতারা আলোচনা করছেন। হয়তো এঁর সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া হচ্ছে না। শেষে তোমার-আমার লড়াইয়ের ফলে দেখা যাচ্ছে, আসনটিতে তৃণমূল জিতে যাবে। সেখানে একপক্ষকে বসে যেতে হবে।’’
সূর্যকান্তবাবুর ওই বার্তায় সভায় উপস্থিত নীচু তলার বাম-কংগ্রেস কর্মীরা হাততালি দিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে আসন বন্টন নিয়ে আরএসপির সঙ্গে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের টানাপড়েন অব্যাহত। সিপিএমের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুর্যকান্তবাবু বাস্তব অবস্থা বিচার করে আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর যে বার্তা দিয়েছেন তা কেবল এ জেলার জন্য নয়। গোটা রাজ্যের জন্য তিনি ওই বার্তা দিয়েছেন। মূল বিষয় হলো তৃণমূলকে হারাতে হবে।’’
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, সিপিএমের সঙ্গে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। তবে শরিক আরএসপির ভাগের একটি আসন আমরা দাবি করেছি। নীলাঞ্জনের দাবি, প্রতিটি বিধানসভায় কংগ্রেসের অন্তত ১০ হাজার করে ভোট রয়েছে। ভোট অঙ্কের হিসেবে এটা কম নয়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে পরাস্ত করতে সিপিএমের সূর্যবাবু যা বলেছেন,তার সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও দ্বিমত নেই।’’
এদিন সকালে গঙ্গারামপুরের স্টেডিয়ামের ঘরে কর্মিসভা ডাকা হলেও শেষপর্যন্ত চড়া রোদ উপেক্ষা করে দলীয় কর্মী সমর্থকেরা উপস্থিত হওয়ায় খোলা মঞ্চেই সভার কাজ শুরু হয়। এ দিন সভার মূল বক্তা বিদায়ী বিধানসভার বিরোধী নেতা সূর্যকান্তবাবু প্রয়োজনে কেন ঝান্ডা ছেড়ে এক হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামতে বলেছেন তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy