Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড়ে স্কুলে বেতন অনলাইনে

রাজ্য সরকার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মাইনে বাবদ মাসে প্রায় ১১ কোটি টাকা দেয় জিটিএকে। অনলাইন ব্যবস্থা চালু হলে মাসের প্রথম কাজের দিনে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি মাইনে জমা পড়ে যাবে।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

গুরুঙ্গ জামানায় কিছুতেই সম্মতি মেলেনি। বিনয় তামাঙ্গ জিটিএ-এর প্রশাসক হয়েই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে। আগামী অর্থবর্ষ থেকে পাহাড়ের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা-কর্মীদের মাইনে হবে অনলাইন ব্যবস্থায়।

রাজ্য সরকার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মাইনে বাবদ মাসে প্রায় ১১ কোটি টাকা দেয় জিটিএকে। অনলাইন ব্যবস্থা চালু হলে মাসের প্রথম কাজের দিনে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি মাইনে জমা পড়ে যাবে। পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে বলে দাবি। বর্তমানে পাহাড়ে কতজন শিক্ষক বেতন পেয়ে থাকেন এবং বাস্তবে কত টাকা প্রয়োজন হয় তার চিত্রও সরকারের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছে। এতদিন এই প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম বাসা বেধেছিল বলে মনে করছিলেন দফতরের আধিকারিকরা।

আজ বুধবার শিলিগুড়িতে শিক্ষা দফতরের একটি দল এসে পৌঁছবে। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা দেবাশিস সরকারের নেতৃত্বে দলটি আসছে শিলিগুড়িতে। দলটি জিটিএ-র আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। কী ধরণের পরিকাঠামো প্রয়োজন তা জানাবেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে যাতে পুরো পরিকাঠামো তৈরির বিষয়টি সেরে ফেলা যায় তার জন্য পর্যায় ভিত্তিক কাজের তালিকাও তৈরি করে দেবেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্য সামসুল আলম বলেন, ‘‘সারা রাজ্যেই এই ব্যবস্থায় শিক্ষকদের বেতন হয়। রাজ্য সরকার ইচ্ছুক থাকলেও পাহাড়ের প্রশাসক বোর্ডের আপত্তিতে এতদিন দার্জিলিঙে তা রূপায়ণ হয়নি। এতদিনে সম্মতি মিলেছে। তাই পাহাড়ের শিক্ষকরাও এপর সুফল পাবেন। স্বচ্ছতা আসবে।’’

এতদিন ধরে চলে আসা নিয়মে জিটিএ-এর শিক্ষা বিভাগে থোক টাকা পাঠাত রাজ্য সরকার। যাকে পরিভাষায় ‘অ্যাডহক’ তহবিল হলা হয়। জিটিএ সেই টাকা বিভিন্ন স্কুলে বরাদ্দ করতো। রাজ্য সরকারের হিসেবে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী পাহাড়ে রয়েছেন। যতজন শিক্ষকদের নামে বেতন বরাদ্দের কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে স্কুলে ততজন রয়েছে কি না অথবা অনুমোদিত তালিকায় বেতন হচ্ছে কিনা তা জানার কোনও উপায় ছিল রাজ্য সরকারের। পর্ষদের এক কর্তার কথায় সে কারণেই সব শিক্ষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে মাইনে দেওয়ার কথা বলেছিল। বার তিনেক জিটিএকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা সাড়া দেননি।’’ সারা রাজ্যে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হলেও এখনও ব্যতিক্রম থেকে গিয়েছে পাহাড়।

পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। জিটিএ-র প্রশাসক বোর্ডে বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপাদের বসিয়েছে রাজ্য সরকার। জিটিএ-তে বিশেষ অডিটের কাজ চলছে। বিনয় তামাঙ্গ নিজেও বিভাগীয় অডিটের নির্দেশ দিয়েছেন। জিটিএ-এর তরফেই উদ্যোগী হয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে অনলাইন মাইনে দেওয়ার পরিকাঠামো তৈরির অনুরোধ করেছেন। বিনয় শিবিরের এক নেতার কথায়, ‘‘অনলাইন ব্যবস্থা শুরু হলে কিন্তু এতদিন কত অনিময় হয়েছে তাও স্পষ্ট হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Online system Salary Teachers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE