করলার জল উপচে থইথই জলপাইগুড়ির দিনবাজার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
কাজ চালাতে প্রয়োজন বারো জন টেকনিশিয়ান। রয়েছেন মাত্র তিন জন। ফলে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের অন্য বিভাগ থেকে ধার করে টেকনিশিয়ান এনে কোনওমতে কাজ চালাতে হচ্ছে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। জেলার একমাত্র সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে বছর খানেক ধরে এই পরিস্থিতি চললেও সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
ওই ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন একসঙ্গে তিন জন টেকনিশিয়ানকে পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ সারাদিনের কাজ চলে সকাল, বিকেল, রাত— এই তিন শিফটে। সে ক্ষেত্রে রাতের শিফটে যিনি কাজ করেন তাঁকে পরের দিন ছুটি দিতে হয়। ফলে দু’জন টেকনিশিয়ানকে রোজ পাওয়া যায়।
ব্লাড ব্যাঙ্কের ইন-চার্জ কৈলাশচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘প্রতি শিফটে অন্তত দু’জন টেকনিশিয়ান দরকার। চাপ বেশি থাকলে আরও বেশি সংখ্যায় তা প্রয়োজন হয়।’’ এই সমস্যা মেটাতে প্রতিদিনই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ, প্যাথোলজি, থ্যালাসেমিয়া ইউনিট বা অন্য কোনও বিভাগ থেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টেকনিশিয়ান আনা হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে এই ব্লাড ব্যাঙ্কটি চালু হয়৷ প্রথম দিকে চাহিদা অনুযায়ী ব্লাড ব্যাঙ্কে টেকনিশিয়ান ছিল৷ একসময়ে আটজন টেকনিশিয়ান থাকলেও কেউ অবসর নিলে বা কারও বদলি হয়ে গেলে, সেই পদে কেউ নিয়োগ না হওয়াতে সংখ্যাটা কমতে কমতে এখন তিনে এসে ঠেকেছে ৷
এ ভাবে ব্লাড ব্যাঙ্ককে সচল রাখা গেলেও অনেক সময়ই বিভিন্ন রক্তদান শিবিরে টেকনিশিয়ান পাঠাতে সমস্যায় পড়ছেন ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তারা। সেখানকার কর্তারা জানাচ্ছেন, কখনও জেলার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক রক্তদান শিবির থাকলে সেগুলিতে টেকনিশিয়ান পাঠাতে বিভিন্ন বিভাগের কর্তাদের কাছে আবেদন করতে হচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে টেকনিশিয়ানের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে৷’’
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্যভবন শাখার নেতা সুশোভন রায়৷ তিনি বলেন, “হাসপাতালের টেকনিশিয়ানদের কাছ থেকে এই সমস্যার কথা জানার পরই আমরা স্বাস্থ্য ভবনে বিষয়টি জানিয়েছি৷”
জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর জানান, ব্লাড ব্যাঙ্ক চালাতে অন্য বিভাগ থেকে প্রতিদিনই টেকনিশিয়ান তুলে নেওয়ায় সেসব বিভাগও মাঝে মধ্যেই সমস্যায় পড়ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘সমস্যার কথা সব মহলেই জানিয়েছি৷ একাধিকবার স্বাস্থ্য ভবনে চিঠিও পাঠানো হয়েছে৷ কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি৷” তবে টেকনিশিয়ানের সংখ্যা বাড়া না পর্যন্ত এখন যেভাবে ব্লাড ব্যাঙ্ক চলছে সেভাবেই চালাতে হবে বলে জানিয়ে ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy