মাছ চাষের জন্য মালদহে সরকারি পুকুর লিজের ক্ষেত্রে টেন্ডারের ন্যূনতম দর বেড়ে যাওয়ায় গৃহস্থের পাতে মাছের দামও বাড়তে পারে একলাফে অনেকটাই। এমনটাই আশঙ্কা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।
এতে উদ্বিগ্ন জেলার ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটি। তাঁদের যুক্তি, টেন্ডারে বেশি দর দিয়ে যদি পুকুর লিজে নিতে হয়, তবে যথেষ্ট লাভ রেখে মাছ বিক্রি করতে হবে। সেক্ষেত্রে মাছের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সোসাইটির দাবি। টেন্ডারের ন্যূনতম দর বিবেচনা করার জন্য সোসাইটির তরফে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হচ্ছে। জেলা জলকর কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী অবশ্য বলেন, ‘‘বাজারে মাছের যে দাম রয়েছে তার চেয়ে অনেক কমেই লিজের রিজার্ভ প্রাইস রয়েছে। এর সঙ্গে মাছের দামের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
মালদহ জেলায় প্রচুর পুকুর রয়েছে, কিন্তু তাতেও জেলায় মাছের চাহিদা মেটে না। চাহিদা মেটাতে পাশের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকেও এই জেলায় মাছ আসে। জেলায় মোট ২১১টি সরকারি পুকুর রয়েছে। পুকুরগুলির আয়তন ৫ একর থেকে শুরু করে ১১৬ একর পর্যন্ত। ওই পুকুরগুলি জেলায় মাছের চাহিদা মেটাতে অন্যতম সহায়। সেগুলির মধ্যে ৭৯টি পুকুরে মাছ চাষের জন্য শীঘ্রই টেন্ডার ডাকা হবে। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট জেলা জলকর কমিটি ওই টেন্ডারের ন্যূনতম দর বা রিজার্ভ প্রাইস এবারই কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরকারি ওই পুকুরগুলি সাধারণত ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি লিজে নেয়। এবারও টেন্ডারে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে ওই সোসাইটিগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। রতুয়ার রুকুন্দিপুর ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটির সম্পাদক গেদন চৌধুরি বলেন, ‘‘এমনিতেই মৎস্যজীবীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। নিরাপত্তা না থাকায় প্রতি বছরই পুকুরের মাছ লুঠ হয়। তার উপরে পুকুর লিজে দিতে টেন্ডারের ন্যূনতম দর বাড়ানো হচ্ছে। এখন চড়া দরে পুকুর লিজে নিলে মাছ চাষের খরচ পুষিয়ে তবেই মাছ বিক্রি করতে হবে।’’
মালদহ জেলা সেন্ট্রাল ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের বোর্ড অব ডিরেক্টর সদস্য শুভময় বসু জানান, টেন্ডারের ক্ষেত্রে ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটির জন্য কিছু পুকুর যেন সংরক্ষিত রাখা হয় সেটা ভাবা উচিত প্রশাসনের।
জেলা সদরের নেতাজি পুর বাজার হোলসেল ফিশ মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহকারি সম্পাদক মহ কাইউম মহলদারও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘সোসাইটি বা যাঁরাই বেশি দরে পুকুর লিজ নেবে তারা তো লাভ রেখেই মাছ বিক্রি করবে। ফলে আমাদেরও বেশি দামে ওঁদের থেকে মাছ কিনে খুচরো ব্যবসায়ীদের বিক্রি করতে হবে।’’