সভাধিপতি-সহ জেলা পরিষদের একাধিক সদস্যকে দলে টেনেও কি রোখা যাবে অপসারণ? মালদহ জেলা পরিষদের আটটি স্থায়ী সমিতির সাত সদস্যের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সিপিএম জোট অনাস্থা এনেছিল। আজ, বুধবার তার তলবি সভা। একে ঘিরেই এখন সরগরম মালদহের রাজনীতি। অপসারণের জন্য ম্যাজিক ফিগার ৩৪। তবে জানা গিয়েছে, বুধবারের সভায় তৃণমূল সদস্যরা হাজির হচ্ছেন না।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধীদের চিঠির প্রেক্ষিতে এবং পরবর্তী সময়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের রায়ে বিভাগীয় কমিশনার ৭ তারিখ সেই অনাস্থার তলবিসভা ডেকেছিলেন। সে দিন ছট পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ায় সভা পিছিয়ে ১৬ তারিখ করা হয়।
৩১ অগস্ট কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে ওই সাত সদস্যের অপসারণ চেয়ে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচ জন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়েছেন। বাকি দু’জন সমাজবাদী পার্টির। তাঁরা আগে পরিষদে কংগ্রেস বোর্ডকে সমর্থন করলেও বর্তমানে তৃণমূল বোর্ডকে সমর্থন করছেন। ওই সাত জন আটটি স্থায়ী সমিতির ১৩টি পদে রয়েছেন।
তাঁদের অপসারণের জন্য এই তলবিসভায় হাজির থাকার কথা জেলা পরিষদের সাধারণ সভার ৬৬ জন সদস্যদের। সেই সাধারণ সভার সদস্যদের মধ্যে জেলা পরিষদের ৩৭ জন সদস্য সহ জেলার ১২ জন বিধায়ক, ২ সাংসদ ও ১৫ জন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও রয়েছেন। সাত জনের অপসারণে ম্যাজিক ফিগার দরকার ৩৪। কিন্তু, এই মুহূর্তের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, বিধায়ক ও সাংসদ মিলিয়ে জোটের ঝুলিতে ৩২ জন সদস্য রয়েছেন।
অন্য দিকে তৃণমূলের রয়েছে ৩৩ জন। এ ছাড়া রয়েছেন বৈষ্ণবনগরের বিজেপির বিধায়ক স্বাধীন সরকার। তিনি অপসারণের পক্ষে ভোট দেবেন, নাকি সভায় হাজিরই হবেন না তা নিয়ে রয়েছে চর্চা। স্বাধীনবাবু অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘দল যা সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই আমি পালন করব। দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও আমি জানি না।’’ জানা গিয়েছে, পাছে তৃণমূল দলে টানে, এই আশঙ্কায় কংগ্রেস ও সিপিএম তাঁদের সদস্যদের পৃথক ভাবে দু’টি গোপন ডেরায় রেখেছে। পাশাপাশি সভায় যোগ না দিলেও তৃণমূলও কয়েক জনকে গোপন ডেরায় রেখেছে বলে খবর। যদিও এ ব্যাপারে কোনও দলই মুখ খুলতে চায়নি।
এ দিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘অপসারণ সভা জোট ডেকেছে। তাই ওদেরই তা প্রমাণ করতে হবে। আমাদের কেউ সভায় যাবে না। আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছি।’’ জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, ‘‘ম্যাজিক ফিগার জোগাড় করে ওই সাত জনকে বুধবার আমরা অপসারণ করবই। আসলে ম্যাজিক ফিগার জোগাড় না করতে পারায় শাসকদল লজ্জায় সভায় হাজির হবে না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রও একই দাবি করেন।
এ দিকে, জোটে ৩২ জন থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বলছে, তা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা। তবে কি কংগ্রেস থেকে শাসকদলে নাম লেখানো দু’জন সদস্য ফের পুরনো দলেই ফিরে গিয়েছেন। জানা যাবে আজই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy