Advertisement
০৬ মে ২০২৪

গণনা নিয়ে কড়া নিরাপত্তা

রাজনৈতিক গোলমালের আশঙ্কায় ভোট গণনা শুরুর সময় থেকে আগামী সাত দিন শিলিগুড়ি-সহ লাগোয়া এলাকাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল দার্জিলিং জেলা পুলিশ-প্রশাসন।

শিলিগুড়ি কলেজে গণনাকেন্দ্রে অতন্দ্র প্রহরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

শিলিগুড়ি কলেজে গণনাকেন্দ্রে অতন্দ্র প্রহরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ০১:৫২
Share: Save:

রাজনৈতিক গোলমালের আশঙ্কায় ভোট গণনা শুরুর সময় থেকে আগামী সাত দিন শিলিগুড়ি-সহ লাগোয়া এলাকাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল দার্জিলিং জেলা পুলিশ-প্রশাসন। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে শহর জুড়ে ওই নিরাপত্তা ব্যবস্থা লাগু হয়ে যাবে। শিলিগুড়ি কলেজ চত্বরের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা ছাড়াও গোটা কমিশনারেট এলাকায় একাধিক মোবাইল ভ্যান, কুইক রেসপন্স টিম, পুলিশ পিকেট থাকবে। একই ভাবে বাকি দার্জিলিং জেলা পুলিশের এলাকাতেও একাধিক সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার-সহ প্রশাসনের কর্তা কলেজ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। ভোটের ফল বার হতে শুরুর পর থেকে আগামী নির্দেশ অবধি কোনও মিছিল, শব্দবাজি-আতসবাজি ফাটানো যাবে না বলে ফের রাজনৈতিক দলগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করা হচ্ছে।

জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘‘ভোট গণনা কেন্দ্র এবং বাইরে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। এদিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরেও দেখা হয়েছে। বাছাই করা সরকারি কর্মীরা ভোট গণনার কাজ করবেন। তবে তাঁদের কোথায় ডিউটি তা আগাম জানানো হচ্ছে না। শেষ মূহুর্তে তা জানানো হবে। নিবার্চন কমিশনের প্রতিটি নির্দেশ রাজনৈতিক দলগুলিকে জানানো হয়েছে।’’ আবার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সাত দিন আপাতত এই ব্যবস্থা কার্যকরী থাকবে। গণনা কেন্দ্রে আধা সামরিক বাহিনীও থাকবে।’’

পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ অফিসার জানিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরে ভোটের ফলকে ঘিরে গোলমালের ঘটনা সাধারণত ঘটে না। অতীতে একাধিকবার লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটে তা দেখা গিয়েছে। তৃণমূল থেকে বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস যেই ক্ষমতা আসুক বা জিতুক, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য নেতারাই বরাবর সচেষ্ট থেকেছেন। এ বারও তাই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া বা খড়িবাড়ির মতো গ্রামীণ এলাকায় ছোটখাটো গোলমালের আশঙ্কা কিছুটা থেকেই যায়। সেই দিকেই বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, সকাল ৬টা থেকে প্রথমে কলেজমাঠে ঘিরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি হবে। স্ট্রংরুম-সহ গণনা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানেরা।

তার পর আরও দুই ধাপে রাজ্য পুলিশের বাহিনী থাকবে। তাতে প্রথম ধাপে কমব্যাট ফোর্স, র‌্যাফের জওয়ানেরা থাকবেন। দ্বিতীয় ধাপের বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে থাকবেন পুলিশ অফিসারেরা, কনস্টেবলেরা। এ ছাড়া গোটা কমিশনারেট জুড়ে থাকবে, ১৭টি মোবাইল ভ্যান, ৭টি স্পেশাল কুইক রেসপন্স টিম এবং ৬০০ পুলিশ কর্মী। দার্জিলিং পুলিশের আওতায় থাকায় চারটি থানায় মোতায়েন থাকবে আরও অন্তত ৩০০ পুলিশ কর্মী। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছে, ভোটের মতই শহর এবং গ্রামীণ এলাকা মিলিয়ে বেশ কিছু স্পর্শকাতর চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। সেখানে গোসমালের আশঙ্কা থাকে। আমরা ওই এলাকাগুলিতে বিশেষ নজর রাখব।

এদিনই শিলিগুড়ি কলেজ এলাকায় যুযুধান দুই দলের ক্যাম্প অফিস তৈরি হয়েছে। একটি নার্সিংহোমের উল্টোদিকে কংগ্রেস ও সিপিএমের জোট প্রার্থীদের একটিই অফিস তৈরি করা হয়েছে। সাত সকলে থেকে সেখানেই অশোক ভট্টচার্য, শঙ্কর মালাকারেরা থাকবেন। এর প্রায় উল্টোদিকেই তৈরি হয়েছে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস। তাতে ভাইচুং ভুটিয়া থেকে শুরু করে বাকি প্রার্থীরা থাকবেন। পুলিশের তরফে দুই ক্যাম্প অফিসকে ঘিরেও আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। ফল ঘোষণা শুরু হতেই ক্যাম্পগুলিকে ঘিরে যাতে কোনও উত্তেজনা না ছড়ায় তাতেও নজর রাখা হচ্ছে।

এ জেলার ছয়টি আসনের গণনা দার্জিলিং, কালিম্পং এবং শিলিগুড়ি হবে। জেলাশাসক জানিয়েছে, দার্জিলিং কেন্দ্র ২৩ রাউন্ড, শিলিগুড়ি ১৭ রাউন্ড, ফাঁসিদেওয়া ১৮ রাউন্ড এবং বাকি মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, কালিম্পং, কার্শিয়াং কেন্দ্রের ২১ রাউন্ডে ফল প্রকাশ হবে। সকাল ৮টায় পোস্টাল ব্যালট দিয়ে গণনা শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 Vote centre
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE