সাহায্য: পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বৃত্তি। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তুঙ্গে শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্ব। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে জেলার নানা প্রান্তে ছড়াচ্ছে উত্তাপ। এসময়েই অন্যরকম ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়িতে। পুর চেয়ারম্যানের ত্রাণ তহবিল থেকে বৃত্তি বিলির অনুষ্ঠান ছিল শনিবার। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চেই পাশাপাশি দেখা গেল শাসক-বিরোধী দু’পক্ষকেই।
উপলক্ষ্য ছিল জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানের ত্রাণ তহবিল থেকে দুঃস্থ পড়ুয়াদের আর্থিক বৃত্তি বিলির অনুষ্ঠান। এখন জলপাইগুড়ি পুরসভা তৃণমূলের দখলে। পুরভবন চত্বরের প্রেক্ষাগৃহে হয়েছে এ দিনের অনুষ্ঠান। সেখানে চেয়ারম্যান মোহন বসু মঞ্চে উঠে দেখেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান কাউন্সিলর বিমল পালচৌধুরী দর্শকাসনে বসে রয়েছেন। তাঁকে দ্রুত মঞ্চে ডেকে নেন মোহনবাবু। মঞ্চে উঠেই চেয়ারম্যানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অভিবাদন জানান বিমলবাবু। দুঃস্থ পড়ুয়াদের বৃত্তি দেওয়া শুরু হয় চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানের হাত দিয়েই। তারপরে সিপিএমের তরুণ কাউন্সিলর প্রদীপ কুমার দে’কেও পড়ুয়াদের হাতে বৃত্তি তুলে দেওয়ার জন্য মঞ্চে ডাকা হয়। প্রদীপ দে ছাড়াও আরও এক সিপিএম কাউন্সিলর মাম্পি সরকারকে দিয়েও বৃত্তি বিলি করানো হয়। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সব বিরোধী কাউন্সিলরই বৃত্তি দেওয়ার জন্য ডাক পান।
চেয়ারম্যান মোহন বসু জানান, বিরোধী কাউন্সিলররাও তাঁদের ওয়ার্ডে কারা বৃত্তি পাবে সেই তালিকা দিয়েছেন। তাঁদের সুপারিশ মতো বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এটা পুরসভার অনুষ্ঠান। কোনও দলাদলি থাকবে না। এমন কথা শুনে কেউ অবাক হতে পারেন, তবে এটাই জলপাইগুড়ির ঐতিহ্য।”
এ দিন বৃত্তি পেয়েছে ১৩৯ জন পড়ুয়া। স্কুল পড়ুয়াদের এককালীন ২ হাজার টাকা এবং কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ৩ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু বছর থেকেই এই বৃত্তি দিচ্ছে পুরসভা। চেয়ারম্যান মাসিক ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা পান। সেই ভাতা জমিয়ে তৈরি হয় এই ত্রাণ তহবিল। সেখান থেকেই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় দুঃস্থ পড়ুয়াদের।
এ দিন ভাতা পেয়েছেন কলেজ ছাত্রী সহেলি। তাঁর বাবা জুতো সেলাই করেন। কৃতী ছাত্রী সহেলির নাম প্রস্তাব করেছিলেন ওই এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর। এ দিন শহরের একটি ভলিবল দলকেও বৃত্তি দেওয়া হয়ে পুরসভার তরফ থেকে।
সিপিএম কাউন্সিলর প্রদীপ দে বলেন, “পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই হতেই পারে। কিন্তু পড়ুয়াদের বৃত্তি নিয়ে আমরা দলাদলি পছন্দ করি না। চেয়ারম্যানও আগে থেকে আমাদের কাছে নাম চেয়ে পাঠান।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর বিমল পালচৌধুরীও। তাঁর কথায়, “দলাদলি ভুলে সারাবছর এই সৌজন্য বজায় থাকলেই ভাল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy