Advertisement
E-Paper

জিতলেন হিতেনও

প্রথম হলেন শীতলখুচির বিধায়ক হিতেন বর্মন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় ও চতুর্থ হলেন যথাক্রমে সিতাইয়ের জগদীশ বর্মন এবং দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩১
খোশমেজাজে পাশাপাশি পার্থপ্রতিম রায় ও হেমচন্দ্র বর্মন। নিজস্ব চিত্র

খোশমেজাজে পাশাপাশি পার্থপ্রতিম রায় ও হেমচন্দ্র বর্মন। নিজস্ব চিত্র

প্রথম হলেন শীতলখুচির বিধায়ক হিতেন বর্মন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় ও চতুর্থ হলেন যথাক্রমে সিতাইয়ের জগদীশ বর্মন এবং দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। বনমন্ত্রী এবং মাথাভাঙার বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের জুটেছে পঞ্চম স্থান। কোচবিহার লোকসভা উপ নির্বাচনের গণনা শেষ হওয়ার পরে তৃণমূলের স্কোরবোর্ডের চেহারা এমনই। জানাই ছিল, লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে জেলার বিধায়কদের তুলমূল্য বিচার করবে দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তাই দলীয় সূত্রের খবর, ভোটের দামামা বাজতেই কে কাকে টেক্কা দিয়ে নিজের বিধানসভা আসনে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারেন, তা নিয়ে তৃণমূলের বিধায়কদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। অভিযোগ, সে দিকে লক্ষ্য রেখে প্রচার তো বটেই, তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসেও প্রতিযোগিতার অভিযোগ তোলে বিজেপি।

এ দিন, ফলাফল ঘোষণার পরে দেখা যায় শাসক দলের প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ২৪১ ভোটে বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মনকে হারিয়ে দিয়েছেন।

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য প্রতিযোগিতার বিষয়টি প্রকাশ্যে মানতে চাননি। তিনি বলেন, “আমরা রেকর্ড ভোটে জিতেছি। সব বিধানসভা আসনে ভোট বেড়েছে। তবে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ব্যাপার নেই।” ঘনিষ্ঠ মহলে অবশ্য রবীন্দ্রনাথবাবু, “ইস অল্পের জন্য প্রথম হতে পারলাম না” বলে খানিকটা আক্ষেপ করেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।

সাংসদ ও সভাপতি। — নিজস্ব চিত্র

হিতেনবাবু অবশ্য সরাসরিই খুশির কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ব্যবধানে এক নম্বরে শীতলখুচি। একটু তো খুশি হবই। তবে এটা সম্ভব হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য।” উদয়নবাবু জানিয়েছেন, যেমনটা আশা করেছিলেন, তার থেকেও বেশি ব্যবধান এসেছে। তিনি বলেন, “সব বিধানসভায় প্রচুর ব্যবধান হয়েছে। এ জন্য আমরা সবাই খুশি। আলাদা করে ভাবা ঠিক নয়।” তাঁর এক অনুগামী অবশ্য বলেন, “দাদা ভেবেছিলেন এক থেকে দুইয়ের মধ্যে থাকবেন। অন্যেরা এমন ভাবে ব্যবধান বাড়াবেন ভাবেননি।”

জেলার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে কোচবিহার লোকসভা আসন। গত বিধানসভা নির্বাচনে একমাত্র কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র বাদে সব আসনই তৃণমূল নিজেদের দখলে রাখে। এ বারে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই বিধায়করা নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে কে কত ব্যবধানে এগিয়ে থাকবেন, তা নিয়ে লড়াই শুরু করে দেন।

তা নিয়ে চাপে পড়ে যান দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু। তাঁর কেন্দ্র থেকেই লোকসভা আসনের প্রার্থী নির্বাচন করে দল। কিন্তু সেখানে সংগঠনের যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে রবিবাবু নিজেও ব্যবধান আশি হাজারে নিয়ে যেতে পারবেন বলে ভাবেননি কখনও। তবে ব্যাট হাতে মাঠে কোনও কৌশল ছাড়েননি তিনি। উদয়নবাবু অবশ্য শুরু থেকেই চালিয়ে খেলেছেন। পঞ্চাশ হাজারে যে এগিয়ে থাকবেন, তা প্রথম দিন থেকে নানা কৌশলে দাবি করছিলেন তিনি। ফল প্রকাশের পরে দু’জনই খুশি। রবীন্দ্রনাথবাবু গত বিধানসভায় ১৬ হাজারের কিছু বেশি ভোটে জয়ী হয়। দিনহাটা কেন্দ্র থেকে উদয়নবাবু ২২ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন। এ বারের উপনির্বাচনে নাটাবাড়ি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থীর ব্যবধান আশি হাজার ১৭৯ ভোট। দিনহাটা থেকে ব্যবধান ৬৪ হাজার ২০ ভোট।

শীতলখুচি কেন্দ্রে অবশ্য হিতেনবাবু সূক্ষ্মভাবে খেলে ব্যবধান তৈরি করেছেন ৮১ হাজার ৫৪৬ ভোটের। যা টপকানো আর কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি। সিতাই বিধানসভা থেকে তৃণমূলের ব্যবধান ছিল ৭৭ হাজার ৪৯৭ ভোট। মাথাভাঙা থেকে ৪৪ হাজার ৪৫২, কোচবিহার দক্ষিণ ৩৩ হাজার ৯৩৩ ভোটে ব্যবধান পায়। কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৩১ হাজার ২১৪ ভোটে এ বারে এগিয়ে তৃণমূল। ওই কেন্দ্রে গত বিধানসভা নির্বাচনে ১৩ হাজার ভোটে বাম প্রার্থীর কাছে হেরে যায় তৃণমূল। ওই কেন্দ্রের গত বিধানসভায় তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী পরিমল বর্মন বলেন, “এবারে অনেক ভাল ফল হয়েছে আমাদের।”

Partha Pratim Roy Hiten Barman coochbehar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy