মালদহ জেলা পরিষদের কংগ্রেসি সহকারী সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার উত্তরকন্যায় গিয়ে জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে তৃণমূলের সদস্যরা ওই অনাস্থার চিঠি জমা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদের একাধিক স্থায়ী সমিতির কংগ্রেসি সদস্যদের বিরুদ্ধেও অপসারণের চিঠি দেওয়া হয়েছে এ দিন। ওই সদস্যদের মধ্যে সাত কর্মাধ্যক্ষও রয়েছেন।
জেলা পরিষদের দলত্যাগী সদস্যদের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও সিপিএম অপসারণ চেয়ে আগেই চিঠি দিয়েছিল এবং তার প্রেক্ষিতে আগামী ১৬ তারিখ তলবি সভাও রয়েছে। তার আগেই শাসকদল পাল্টা কংগ্রেসি সদস্যদের অপসারণ চেয়ে চিঠি দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কংগ্রেস ও সিপিএমের বক্তব্য, ১৬ তারিখ তলবি সভা রয়েছে, তাই চাপ সৃষ্টি করতে শাসকদল এই খেলা খেলল। কিন্তু কোনও লাভ হবে না। শাসকদলের দাবি, সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতেই এটা করা হয়েছে।
গত ৩১ অগস্ট কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে জেলা পরিষদের সাতজন সদস্যের অপসারণ চেয়ে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছিল। ওই সাত জনের মধ্যে পাঁচজন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়েছেন। বাকি দুজন সমাজবাদী পার্টির হলেও তাঁরা আগে পরিষদে কংগ্রেস বোর্ডকে সমর্থন করেছিল কিন্তু বর্তমানে তৃণমূল বোর্ডকে সমর্থন করছেন। ওই সাতজন আটটি স্থায়ী সমিতির ১৩টি পদে রয়েছেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধীদের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে এবং পরবর্তীতে কলকাতা উচ্চ আদালতের রায়ে বিভাগীয় কমিশনার ৭ তারিখ সেই অপসারণের তলবিসভা ডেকেছিলেন। কিন্তু সে দিন ছট পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ায় সেই সভা ১৬ তারিখ হবে বলে স্থির হয়।
এদিকে সেই তলবি সভার আগেই পালটা অপসারণের চিঠি দিল তৃণমূল। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ একাধিক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কার্যত বোর্ড দখল করে শাসকদল।
কিন্তু সহকারী সভাধিপতি সায়েদ আহমেদ সহ বাকি সদস্যরা কংগ্রেস ও সিপিএমেই রয়ে গিয়েছেন। এবার তৃণমূল সেই সহকারী সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল। এছাড়া কংগ্রেসের জেলা পরিষদের ১৬ জন সদস্য যাঁরা বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির সদস্য রয়েছেন, তাদের অপসারণ চেয়েও এ দিন চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নূর বলেন, ‘‘শাসকদল দলবদলের রাজনীতিতে মজে রয়েছে। ১৬ তারিখের তলবিসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে পারবে না জেনে এখন এভাবে অনাস্থা এনে ও অপসারণের চিঠি দিয়ে আমাদের সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘জোর করে বিরোধীদের দলে টানতেই তৃণমূলের এই খেলা। যদিও জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য গৌর মণ্ডল, প্রভাস ও উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘এখন আমরাই যে জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ তা প্রমাণ করতেই অনাস্থা আনা ও অপসারণের চিঠি দেওয়া। চাপের কোনও ব্যাপারই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy