Advertisement
১৬ মে ২০২৪

জমি সমস্যায় কাজ থমকে প্রকল্পের

জমি জটে এমনিতেই কাজ হচ্ছে ধীর গতিতে। এর সঙ্গে আছে কাজে ঢিলেমির অভিযোগও। ফলে কাজ শুরু হওয়ার পরে আড়াই বছর কেটে গেলেও এখনও তৈরি হয়নি মাথাভাঙা দমদমা ঝিল পর্যটন কেন্দ্র। অভিযোগ, কাজ শুরুর সময় তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব আশ্বাস দিয়েছিলেন দেড় বছরের মধ্যে শেষ হবে ওই কাজ।

মাথাভাঙার দমদমা ঝিলে আটকে পর্যটনের কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

মাথাভাঙার দমদমা ঝিলে আটকে পর্যটনের কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৩
Share: Save:

জমি জটে এমনিতেই কাজ হচ্ছে ধীর গতিতে। এর সঙ্গে আছে কাজে ঢিলেমির অভিযোগও। ফলে কাজ শুরু হওয়ার পরে আড়াই বছর কেটে গেলেও এখনও তৈরি হয়নি মাথাভাঙা দমদমা ঝিল পর্যটন কেন্দ্র।

অভিযোগ, কাজ শুরুর সময় তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব আশ্বাস দিয়েছিলেন দেড় বছরের মধ্যে শেষ হবে ওই কাজ। অথচ অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি বলে অভিযোগ। ঝিল ঘিরে তৈরি হওয়া সুদৃশ্য পাঁচিল অর্ধেক হয়েছে। কাজের মন্থরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শীঘ্র ওই ঝিল পরিদর্শনে তিনি যাবেন বলেও জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে তা নিয়ে খোঁজ নেব। সবার সঙ্গে কথা বলে যাতে দ্রুত কাজ শেষ করা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাথাভাঙা থেকে দশ কিলোমিটার দূরে গোপালপুরের দমদমা ঝিলের আকর্ষণ বরাবরের। সপ্তাহান্তে শনি ও রবিবার ছুটির দিন বাসিন্দারা ভিড় করতেন ঝিলের ধারে। শীতলখুচির বিধায়ক হিতেন বর্মনের উদ্যোগে ২০১৩ সালে ওই ঝিল ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। প্রায় তিরিশ একর জমিতে থাকা ওই ঝিলে বোটিংয়ের ব্যবস্থা, পার্ক গড়ে তোলা ও পিকনিক স্পট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ ছাড়াও সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য একটি কনফারেন্স হল করার প্রকল্পও নেওয়া হয়েছিল। ঝিলের চারদিক পাঁচিল দিয়ে ঘিরে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিল। ৩৫ একরের কিছু বেশি জমিতে পাঁচ কোটি টাকার প্রকল্প ছিল এটি। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে জলপাইগুড়ির একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে ওই কাজের বরাত দেওয়া হয়। তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছিলেন, ২০১৫-র অগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। বিধায়ক হিতেনবাবু বলেন, “ওই কাজ চালু রয়েছে। জমি নিয়ে কিছু সমস্যা আছে।’’ কথা বলে তা মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

ওই প্রকল্পের কাজে পিকনিক স্পট ও কনফারেন্স হল তৈরির জন্য পাঁচ একর জমির প্রয়োজন। প্রকল্প তৈরির সময় ওই ঝিলের সঙ্গে লাগোয়া পাঁচ একর জমি ধরেই প্রকল্প তৈরি করা হয়। পরে জানা যায়, ২০১০ থেকেই সরকারি ওই জমি ভূমিহীনদের পাট্টা দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁদের অনেকেই জমি ফিরিয়ে দিতে আপত্তি করেছেন। তাতেই বেঁধেছে বিপত্তি। মাথাভাঙা-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদও জমির প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানালেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, জমির সমস্যা খুব শীঘ্র মিটে যাবে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই জমির জন্য প্রকল্পের একটি অংশের কাজে অসুবিধে থাকলেও বাকি অংশে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সেখানেও ঢিমেতালে কাজ হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। বাসিন্দাদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে ঠিকাদারি সংস্থার তরফে বলা হয়েছে একমাত্র জমির জন্যই কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। যদিও বর্ষা নামায় এখন ওই কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE