Advertisement
E-Paper

গজলডোবায় নিজেরাই আধুনিক রিসর্ট তৈরি করবে পর্যটন দফতর

বেসরকারি উদ্যোগীদের আস্থা বাড়াতে গজলডোবায় এবার নিজেরাই আধুনিক রিসর্ট তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর। শুধু তাই নয়, গজলডোবা থেকে সরস্বতীপুর চা বাগান হয়ে শালুগাড়া লাগোয়া বেঙ্গল সাফারি পার্ক অবধি হাতি ও কার সাফারিও শুরু করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৭:৩২
শিলিগুড়িতে বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। — নিজস্ব চিত্র

শিলিগুড়িতে বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। — নিজস্ব চিত্র

বেসরকারি উদ্যোগীদের আস্থা বাড়াতে গজলডোবায় এবার নিজেরাই আধুনিক রিসর্ট তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর। শুধু তাই নয়, গজলডোবা থেকে সরস্বতীপুর চা বাগান হয়ে শালুগাড়া লাগোয়া বেঙ্গল সাফারি পার্ক অবধি হাতি ও কার সাফারিও শুরু করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। একইভাবে গজলডোবায় বড়মাপের যুব আবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের যুব কল্যাণ দফতর। শনিবার বিকে লে শিলিগুড়ির দফতরে গজলডোবাকে ঘিরে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।

দফতর সূত্রের খবর, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরের বছর গজলডোবায় মেগা ট্যুরিজম প্রকল্পের ঘোষণা করে তৃণমূল সরকার। রাস্তা, বাঁধ, বিদ্যুৎ, নিকাশি-সহ একাধিক পরিকাঠামোর কাজ শুরু হয়। পরিকাঠামো তৈরির জন্য ৩০০ কোটি টাকার ঘোষণা করা হয়। এখনও অবধি ১০০ কোটি টাকা খরচও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জমির লিজের মেয়াদ নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রথম থেকেই উদ্যোগীরা প্রকল্পটি নিয়ে উৎসাহ দেখাননি। প্রথমে জমি ৩৩ বছরের সময়ের জন্য লিজে দেওয়ার কথা বলা হলেও পরে তা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের ঘোষণা হয়। এতে আপাতত ৪টি সংস্থা হোটেল, রিসর্ট গড়ার উৎসাহ দেখিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। সেই সঙ্গে পর্যটন দফতরও সেখানে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ায় কথা জানায়। তার পরেও অন্য কয়েকজন উদ্যোগী খোঁজ নিলেও কেউ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেননি।

মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘ডুয়ার্সের জলদাপাড়া বা মূর্তির আদলে আমরা গজলডোবায় রির্সট তৈরি করব। সেটিকে ঘিরে একটি টুরিস্ট স্পট হবে। এর বিস্তারিত প্রকল্পটি তৈরি হচ্ছে। এর আকর্ষণ আরও বাড়াতে হাতি ও গাড়ি সাফারি দিয়ে বেঙ্গল সাফারির সঙ্গে গজলডোবাকে জোড়া হবে। এতে এলাকায় আকর্ষণ বাড়বে। এতে বেসরকারি সংস্থাগুলি বিনিয়োগে উৎসাহ পাবে। আরও কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।’’

পযর্টন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অল্প সময়ের জমি নিজের কথা বলায় বিনিয়োগকারারীরা প্রথম আসেননি। নীতি বদল করায় উদ্যোগীরা আসা শুরু করেছেন। এই সময় সরকার নিজে সেখানে রিসর্ট, বাংলো বা লজ চালু করলে এলাকায় আকর্ষণ বাড়তে বাধ্য। সঙ্গে হাতি, গাড়ি সাফারির ব্যবস্থা হলে তা আরও জোরদার হয়। তার পরেই সেখানে বেসরকারি বিনিয়োগ আসা জোরদারভাবে শুরু হয়। গরুমারা, জলদাপাড়া থেকে সর্বত্র তাই হয়েছে। আর শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ২১ কিলোমিটারের মধ্যে তা ঠিকঠাক তৈরি করা হলে পর্যটকদের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যাও থাকবে না। গজলডোবায় নিজেরাই রিসর্ট করার সিদ্ধান্ত দফতরের আরও আগেই নেওয়া উচিত ছিল।

শুধু সরকারি রিসর্ট বা বাংলো চালু করলেই যে বিনিয়োগকারী বা পর্যটকদের আস্থা ফেরে না নয়, সেগুলির পরিষেবা নিয়েও নানা প্রশ্ন থাকার বিষয়টিও ভাবাচ্ছে দফতরের অফিসারদের। বিশেষ করা পরিষেবা, কর্মীদের ব্যবহার, খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেই। এই সমস্যা মেটাতেই তা লজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক শুরু করেছেন মন্ত্রী। কলকাতায় ২৯টি লজের আধিকারিকদের নিয়ে গত সপ্তাহে বৈঠকের পর এদিন উত্তরবঙ্গের ১৩টি লজের ম্যানেজার-সহ অফিসারদের নিয়ে গৌতমবাবু বৈঠক করেছেন। দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য ম্যানেজারদের স্মার্টফোন দেওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।

মন্ত্রী জানান, সমস্ত টুরিস্ট লজকে আধুনিকভাবে চালাতে হবে। খাবার থেকে ঘর, ল্যান্ডস্পেকিং থেকে কনফারেন্স হল, জেনারেটর, কর্মীদের পরিষেবা ঠিকঠাক রাখতে হবে। কিছু কিছু পরিকাঠামোর বদল, সংস্কার দরকার। সেগুলি করা হবে। টাকার কোনও সমস্যা হবে না। কয়েকটি টুরিস্ট লজ লিজে রয়েছে। সেগুলি নিজেরাই চালানোর চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নিউ দীঘার লিজ শেষ হয়েছে। এবার থেকে আমরা তা চালাব। গত শুক্রবার রাজ্য বাজেট হয়েছে। ২৯৫ কোটি টাকা দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩৮ কোটি টাকা বেশি। পাশাপাশি, চা বাগান এবং বিভিন্ন জঙ্গলকে গিরে মনসুন ট্যুরিজমের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

Goutam Deb Private resort Tourism sector
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy