Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

টয় ট্রেন অনিশ্চিত

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘বনধের সময়ে ঝোপ-আগাছায় রেলপথের সিংহভাগ এলাকাই ডাকা পড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীদের নিরাপত্তাই প্রধান। সে কারণে বেশি সময় প্রয়োজন হলেও সবকিছু ঠিকঠাক করেই ট্রেন চালানো হবে।’’

পথরুদ্ধ: টয় ট্রেনের লাইনে জন্মেছে আগাছা। নিজস্ব চিত্র

পথরুদ্ধ: টয় ট্রেনের লাইনে জন্মেছে আগাছা। নিজস্ব চিত্র

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৮
Share: Save:

তিন মাস ধরে গজানো ঝোপ-আগাছায় ঢাকা পড়েছে রেল লাইন। যা কিনা তিন সপ্তাহ ধরে কেটেও শেষ করা যাচ্ছে না। এমনই দাবি রেল কর্তৃপক্ষের। আর এ সব আগাছা সাফ না করে দার্জিলিঙের পথে টয়ট্রেন চালানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিল উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল।

রেলের এই বিভাগই দার্জিলিঙের পাহাড়ি রাস্তায় টয়ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। রেলের একটি সূত্র মারফত জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ অক্টোবরের মধ্যে লাইন সাফ করার কাজ শেষ হওয়ার কথা। সে দিনই ট্রেন চালানোর মহড়া হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তারপর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে।

দার্জিলিঙে টানা বন্‌ধ শুরু হওয়ার পর টয়ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। ষষ্ঠীর দিন বন্‌ধ প্রত্যাহারের পরে ধীরে ধীরে সব পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে এলেও ব্যাতিক্রম কেবল টয়ট্রেন। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার পথে লাইন জুড়ে এতটাই ঝোপ গজিয়েছে যে শয়ে শয়ে লোক লাগিয়েও সব সাফ করা সম্ভব হয়নি। বর্ষার শুরুতেই বন্‌ধ ডাকা হয়। তার পর থেকে ট্রেন চলাচল দূরের কথা লাইন রক্ষণাবেক্ষণেরও কোনও কাজ হয়নি। বৃষ্টির জল পেয়ে তরতরিয়ে বেড়েছে ঝোপ। তবে বন্‌ধের সময়ে অন্তত লাইন সাফসুতরো করার কাজ করা হলে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হতো না বলে দাবি বিভিন্ন মহলের। প্রশ্ন উঠেছে রেলের পেশাদারি মনোভাব নিয়েও। রেলের পাল্টা দাবি, বন্‌ধের সময় পাহাড়ের একাধিক স্টেশনে হামলা হয়েছিল। সেই আশঙ্কাতেই কর্মীরা পাহাড় থেকে নেমে আসে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘বনধের সময়ে ঝোপ-আগাছায় রেলপথের সিংহভাগ এলাকাই ডাকা পড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীদের নিরাপত্তাই প্রধান। সে কারণে বেশি সময় প্রয়োজন হলেও সবকিছু ঠিকঠাক করেই ট্রেন চালানো হবে।’’

গত ১৫ জুন পাহাড়ে টানা বন্‌ধ শুরু হয়। সে দিন থেকে টয়ট্রেন চলাচলও বন্ধ। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং এবং ফিরতি পথে প্রতিদিন একজোড়া করে ট্রেন চলে। দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত ন’টি জয় রাইড হয়। এগুলি মূলত পর্যটকদের জন্য পরিকল্পনা করেই চালানো হয়। শিলিগুড়ি থেকে রংটং-তিনধারিয়া পর্যন্তও কয়েকটি জঙ্গল সাফারি রাইডও চলে। বন্‌ধের কারণে সে সবই বন্ধ ছিল। গয়াবাড়ি সহ কয়েকটি স্টেশনে বন্‌ধের সময়ে হামলাও হয়। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় স্টেশন। রেলের দাবি সে কারণেই কর্মীরা ভয় পেয়ে স্টেশন ছেড়ে চলে যান।

গত রবিবার থেকে শিলিগুড়ি থেকে সুকনা পর্যন্ত পর্যটনের বিশেষ ট্রেন চলছে। রেল মন্ত্রকের নির্দেশে তড়িঘড়ি লাইন সাফ করে সেই অংশে ট্রেন চলছে। দার্জিলিঙে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ টয়ট্রেন। টয়ট্রেন চালু হলে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা ছিল। আক্ষেপ পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Train toytrain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE