Advertisement
E-Paper

ট্রাক্টরের মাটিতে ঝুঁকি জাতীয় সড়কে

ঘটনা ১: জাতীয় সড়ক ধরে দূরন্ত গতিতে ছুটছে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর। ইটভাঁটায় যাওয়ার পথে প্রায় প্রতিটি ট্রাক্টরের পিছনের ট্রলি থেকে রাস্তায় পড়তে পড়তে চলেছে খাল-বিল থেকে কাটা ভেজা মাটি। ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কের পিচের চাদর ঢেকে যাচ্ছে ওই মাটির আস্তরনে।

বাপি মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৯

ঘটনা ১: জাতীয় সড়ক ধরে দূরন্ত গতিতে ছুটছে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর। ইটভাঁটায় যাওয়ার পথে প্রায় প্রতিটি ট্রাক্টরের পিছনের ট্রলি থেকে রাস্তায় পড়তে পড়তে চলেছে খাল-বিল থেকে কাটা ভেজা মাটি। ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কের পিচের চাদর ঢেকে যাচ্ছে ওই মাটির আস্তরনে।

ঘটনা ২: মোটরবাইকে চেপে জাতীয় সড়ক ধরে স্কুলে যাওয়ার সময় বাইক থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়লেন এক শিক্ষক। রাস্তার উপরের ভিজে মাটিতে টাল সামলাতে পারেননি তিনি। রাস্তার দু’পাশের খেত থেকে কয়েক জন চাষি হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে তাঁকে ধরে তুললেন। জামা-প্যান্ট ছিঁড়ে গিয়েছে। আঘাত গুরুতর না হলেও হাত-পা ছড়ে রক্ত ঝরছে।

৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক হোক বা রাজ্য সড়ক, মালদহের চাঁচল মহকুমার চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার রাস্তা যে কতটা বিপজ্জনক, তা প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকা এ ধরনের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট। বিপজ্জনক এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায় রোজ বাইক চালকদের ছোট বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হচ্ছে। সমস্যার কথা অজানা নয় পুলিশ-প্রশাসনের। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিশেষ করে যে সমস্ত ট্রাক্টর দিনরাত ওই মাটি বইছে, তাদের অধিকাংশেরই বৈধ নথি নেই। পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে দিনের পর দিন ওই অবস্থা চলতে থাকলেও এ রকম একটি সমস্যা নিয়ে প্রশাসন কেন নীরব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “এটা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কেউ অভিযোগ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া মুশকিল। তবুও বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”

চাঁচলের মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, “বিডিওদের বিষয়টি দেখতে বলছি। পাশাপাশি কী করা যায় তা দেখছি।”

সামসি থেকে চাঁচল হয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরগামী ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশে, চাঁচল-স্বরূপগঞ্জ বা আশাপুরগামী রাজ্য সড়কের দু’পাশেও অসংখ্য ইটভাঁটা রয়েছে। সেই ইটভাঁটায় মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় তা উপচে পড়ছে রাস্তার উপরে। ট্রলির মাপের থেকে বেশি মাটি ভর্তি করার পাশাপাশি বেশি ট্রিপের জন্য দ্রুত গতিতে যাতায়াতের জন্য ট্রাক্টর থেকে মাটি রাস্তায় উপচে পড়ে বলে মাটি সরবরাহকারীদের সূত্রেই জানা গিয়েছে। ওই ভেজা মাটি একসময় শুকিয়ে ধুলোয় পরিণত হয়। ফলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দূষণ এড়াতে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে যেতে হয়। আবার শুকনো মাটিতে কুয়াশা পড়লে বা বৃষ্টি হলে ফের তা ভিজে ওঠে। বাইক, সাইকেল এমনকী পায়ে হেঁটে যাতায়াতও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়। বাসে চেপে যাতায়াতের সময়েও দূষণ এড়াতে নাকে রুমাল চাপা দিতে হয় নিত্যযাত্রীদের।

হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা একটা জ্বলন্ত সমস্যা। বেশ কয়েক বার তাড়া করে পুলিশ ট্রাক্টর আটকও করেছে।”

চাঁচলের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খানপুর আজাদ গ্রামোন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, “আদালতের নির্দেশে চাঁচলের অবৈধ ইটভাঁটাগুলি এক সময়ে বন্ধ হয়েছিল। রাস্তা তো মানুষের যাতায়াতের জন্য। এ ক্ষেত্রে জনস্বার্থের মামলা করা যায় কী না, তা নিয়ে আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করব।”

bapi majumdar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy