Advertisement
E-Paper

স্মৃতির পুজোয় ভবানী পাঠক

এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আজ বৃহস্পতিবার রাতভর সেই পুজো চলবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:৫০
প্রাচীন: গোবরজনার মন্দির। নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রাচীন: গোবরজনার মন্দির। নিজস্ব সংবাদদাতা

চার দিকে ঘন জঙ্গল। পাশ দিয়ে বইছে কালিন্দ্রী নদী। নিশুতি রাতে সেই জঙ্গলে ঢাকা মন্দিরে মা কালীর মন্ত্রোচ্চারণে করে চলেছেন এক সাধক। সেই মন্ত্রোচ্চারণে রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছে। সেই সাধক, ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানির মন্ত্রদাতা। তবে ভবানী পাঠক আসার অনেক আগে, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে থেকেই রতুয়ার গোবরজনা কালী মন্দিরে পুজো হয়ে আসছে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না। আজ বৃহস্পতিবার রাতভর সেই পুজো চলবে।

কথিত আছে, সাড়ে তিনশো বছরেরও বেশি আগে গোবরজনা-সহ সংলগ্ন গ্রামগুলিতে রাজপুতদের বাস ছিল। সেই রাজপুতদেরই এক প্রভাবশালী বংশধর ঘন জঙ্গলে মন্দির স্থাপন করে কালীপুজো চালু করেছিলেন। সে সময় গঙ্গা ও মহানন্দা নদীর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল কালিন্দ্রী। বিশাল বিশাল বজরা কালিন্দ্রী দিয়ে যাতায়াত করত। সে সময় মালদহ ছিল অতুল ধনসম্পদময় এলাকা। সেন বংশের শেষ সময় থেকে শুরু করে সুলতানি আমলেও রাজারা বসবাস শুরু করেছিলেন। জনপদ স্থাপন করেছিলেন ব্রিটিশ ও পর্তুগিজরাও। সম্ভবত, সেই সম্পত্তির টানেই কোনও এক সময় কালিন্দ্রীতে বজরা ভাসিয়ে দেবী চৌধুরানিকেও নিয়ে এসেছিলেন ভবানী পাঠক। গোবরজনায় বেশ কয়েক দিন তন্ত্রসাধনার পর তিনি নিজের গন্তব্যস্থলে চলে যান। যত দিন ভবানী পাঠক তন্ত্রসাধনা করেন তত দিন বজরাতেই ছিলেন দেবী চৌধুরানি।

রাজপুতদের প্রবর্তিত এই পুজোর দায়িত্বে এখন রয়েছেন গোবরজনা গ্রামেরই বাসিন্দা সুধাংশু চৌধুরী ও তাঁর পরিবার। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ৭৮ বছরের সুধাংশুবাবুই ভবানী পাঠকের কাহিনী শুনিয়ে জানালেন, রাজপুতদের সেই গ্রাম এখন কালিন্দ্রীর গর্ভে। কালিন্দ্রীর ভাঙন থেকে বাঁচতে জনপদ ধীরে ধীরে সরে আসে। তিনি আরও বলেন, ‘‘সব ধর্মের মানুষের জন্যই মন্দিরের দ্বার উন্মুক্ত। পুজোয় নিয়ম মেনে এখনও বলি প্রথা চালু রয়েছে। মা এখানে ভয়ঙ্করী। আগে, পুজোর দিন মোষ বলি দেওয়া হতো, কিন্তু এখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ সামিল হন। সে জন্য মোষ বলি কালীপুজোর দিনের পরিবর্তে বৈশাখ মাসে দেওয়া হয়।’’

তিনি জানান, বিজয়া দশমীর দিন গোবরজনা ও গোঁসাইপুর গ্রামের বাসিন্দারা মন্দির থেকে মায়ের পট তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যান। লক্ষ্মীপুজোর দিন সেই পটে মাটি পড়ে। পুজোর দিন বাড়ি থেকে মূর্তি মন্দিরে যায়। তবে এই মন্দিরে মায়ের নিত্য পুজোও চলে।

Diwali কালীপুজো Kali Puja 2017
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy