উদ্ধার হওয়া বাঘের চামড়া নিয়ে ধৃত চারজন। নিজস্ব চিত্র।
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া পাচার করার সময় উদ্ধার হল চামড়া সমেত বাঘের হাড়। পাচারের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদু্য়ারের নিউ হাসিমারা এলাকায়।
বন দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম বাবুল ঘিমিরে, বাবু হোসেন, বিনোদ রাই এবং শেরিং ওয়াংদি। এদের মধ্যে প্রথম তিনজন জয়গাঁর বাসিন্দা। শেরিং ওয়াংদি ভুটানের ফুন্টশিলিং শহরের বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ নিউ হাসিমারা এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। তাদের ব্যবহার করা একটি গাড়ি এবং দুটি মোটরবাইকও আটক করা হয়েছে। এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১১ ফুট লম্বা এবং ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের চাম়ড়া এবং ৮৮ টুকরো বাঘের হাড়।
বন দফতরের বেলাকোবা রেঞ্জের আধিকারিক সঞ্জয় দত্ত বলেন, “আমাদের কাছে খবর ছিল যে একটি বাঘের চামড়া পাচার করা হবে। শুক্রবার ভোর সাড়ে চারটে থেকে আমরা নিউ হাসিমারা এলাকায় অপেক্ষা করতে থাকি। সন্ধ্যা ছটার সময় গাড়ি সমেত ওদের ধরা হয়। চামড়া এবং হাড় চিনে পাচার করার উদ্দেশ্য ছিল বলে ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে।”
বন দফতরের দাবি, এদের ধরার জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করে। যার নেতৃত্বে ছিলেন বেলাকোবার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত। দফতর সূত্রের খবর, বাবু হোসেন জয়গাঁর বাসিন্দা হলেও ভুটানের গ্যালেফুতে তার একটি মোবাইল সারাইয়ের দোকান আছে। তার সঙ্গে এক ব্যাক্তির যোগাযোগ হয়। সে তাকে বাঘের চামড়া পাচারের কথা বলে। সে বাবুল ঘিমিরেকে বিষয়টি জানায়। কথামত জয়গাঁতে চামড়াটি হস্তান্তর করা হয়। চামড়াটি রাখা হয় বিনোদ রাইয়ের বাড়িতে। তার সঙ্গে ছিল ভুটানের শেরিং ওয়াংদি। নিউ হাসিমারা এলাকায় চামরা এবং হাড়গুলি একজনকে দেওয়ার কথা ছিল।
শনিবার সেই মতো, বাবু হোসেন এবং বাবুল ঘিমিরে দুটি মোটরবাইকে করে এসেছিলেন। অন্যজন বিনিদ রাই এবং শেরিং ওয়াংদি একটি গাড়িতে করে আসেন। নিউ হাসিমারাতে চামড়াটি হস্তান্তর করার কথা ছিল। সেই সময় বন দফতরের কর্মীরা গাড়ি সমেত তাদের ধরে ফেলে। রবিবার তাদের জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হলে তাদের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। আজ, সোমবার তাদের ফের হাজির করিয়ে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বন দফতর।
যে বাঘের চামড়াটি পাচার করা হচ্ছিল সেই বাঘটির হাড়ের মধ্যে মাংসও লেগে ছিল। যা দেখে বনকর্মীদের অনুমান বাঘটিকে বেশিদিন হল মারা হয়নি। ধৃত বাবু হোসেন এবং বিনোদ রাই দাবি করেছে, “এক ব্যক্তি আমাদের চামড়াটি নিয়ে যেতে বলেছিল। সে কে তা জানি না।”
এই এলাকায় বন্যপ্রাণের সঙ্গে জড়িত নানা জিনিস পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে একাধিকবার দুষ্কৃতীদের থেকে সাপের বিষ, হাতির দাঁতের মতো সামগ্রী উদ্ধার করেছে বন দফতর। তাই এলাকার পরিবেশপ্রেমী সংগঠনেরা দাবি তুলেছে, এর পিছনে জড়িত চক্রের চাঁইদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার। বন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, কোনও চক্রের যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy