শিলিগুড়ির সেবক রোডের অ্যাসিডকান্ডে জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত মনোজ কুমার সিংহকে জেরা করেই ধৃতের হদিশ পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ির থানার বাবুপাড়া থেকে সঞ্জয় গুপ্ত ওরফে মন্টু নামের যুবককে ধরা হয়। তিনি পেশায় লটারির দোকানের কর্মী। বাবুপাড়ায় সঞ্জয়ের বাড়ি। পুলিশের দাবি, ঘটনার সঞ্জয়ের বাইকই ব্যবহার হয়েছিল। সে এবং মনোজ বাইকে গিয়ে অ্যাসিড কান্ড ঘটিয়েছিল। মনোজই অ্যাসিড ছুঁড়েছিল। এদিন সঞ্জয়কে জলপাইগুড়ি আদালতে পেশ করে সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “মনোজকে জেরা করেই সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাইকটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।” পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির একটি হার্ডওয়ারের দোকান থেকে শৌচালয় পরিস্কার, টাইলস এবং মার্বেল পরিস্কারের কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিডটি কেনা হয়েছিল। তবে সেটি ঠিক কী ধরণের অ্যাসিড তা ফরেনসিক রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, সেবক রোডের একটি পানশালায় দুই যুবকের মাধ্যমে আহত তরুণী গায়িকার সঙ্গে অভিযুক্ত মনোজের পরিচয় হয়েছিল। ওই দুই যুবককেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁদের জেরার পর পুলিশের দাবি, ওই তরুনীকে প্রেম এবং বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল মনোজ। সাড়া না পেয়ে অভিযুক্ত ওই তরুণীর বাড়িতেও গিয়ে প্রেম নিবেদন করে। তাতেও সে ব্যর্থ হয়। তরুণী এবং পরিবারকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় মনোজ। একবার তরুণী তা অস্বীকার করায় বেঁধে রেখে মারধরও করে মনোজ। তরুণী গায়িকা ও তার পরিবারকে সেনাকর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিল অভিযুক্ত মনোজ। আসলে সে শালুগাড়ায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহের কাজ করত। ঘটনার পর মনোজ হরিয়ানা পালিয়ে যায়। সঞ্জয় শিলিগুড়িতেই ছিল।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, এর পরে মনোজ বদলা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সেই সময় সঞ্জয়ের সঙ্গে পানশালায় পরিচয় বলে মনোজের। দুই জনের মধ্যে ভাল বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মনোজের পরিকল্পায় সায় দেয় সঞ্জয়। সেই মতন গত ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেবক রোডের একটি পেট্রল পাম্পের সামনে অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনাটি ঘটে। গাড়ির ভিতরে ছিলেন পানশানার তিন তরুণী গায়িকা ও গাড়ির চালক। গাড়িতে করে তাঁদের পানশালায় পৌঁছে দিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অ্যাসিডে পুড়ে জখম হন দুই তরুণী গায়িকা ও গাড়ির চালক। আপাতত অবশ্য তাঁরা অনেকটা সুস্থ রয়েছেন। একজন তরুণীর এখনও চিকিত্সা চলছে। লুধিয়ানার বাসিন্দা অপর তরুণীকে তাঁর পরিবার নিয়ে গিয়েছে। শনিবার হরিয়ানা থেকে মনোজকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়ি নিয়ে আসে পুলিশ। গত বুধবার আদালতে পেশ করে মনোজকে সাত দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy