Advertisement
E-Paper

অধ্যক্ষ ঘেরাওয়ের প্রতিবাদ তৃণমূলেই

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষকে বাড়ির সামনে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামল এসএফআই। রবিবার ওই সংগঠনের কর্মী সমর্থকরা ময়নাগুড়িতে মিছিল করে ধিক্কার জানায়। অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় বিরক্ত কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমান তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও শুরু করেছেন। ঘটনার সমালোচনায় মুখর হয়েছে ‘আক্রান্ত আমরা’ মঞ্চ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৩

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষকে বাড়ির সামনে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামল এসএফআই। রবিবার ওই সংগঠনের কর্মী সমর্থকরা ময়নাগুড়িতে মিছিল করে ধিক্কার জানায়। অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় বিরক্ত কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমান তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও শুরু করেছেন। ঘটনার সমালোচনায় মুখর হয়েছে ‘আক্রান্ত আমরা’ মঞ্চ।

শুক্রবার বিকেলের পর থেকে ৪২ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তির দাবিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের একাংশের নেতৃত্বে প্রথমে কলেজের অধ্যক্ষের বাড়ির সামনে অবস্থান করে। পরে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলে। এদিন বিকালে এসএফআই-র জেলা সম্পাদক অঞ্জন সেন জানান, সংগঠনের তরফে জেলা জুড়ে প্রতিবাদ সভা ও মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আনন্দচন্দ্র কলেজের ইতিহাসে ওই ধরণের ঘটনা এর আগে কখনও হয়নি। তিনি বলেন, “শিক্ষকদের নিরাপত্তা বলে কিছুই যে নেই, সেটা শুক্রবারের ঘটনায় স্পষ্ট। দাদাগিরি চরমে পৌঁছেছে। বিপন্ন শিক্ষা জগতকে রক্ষার জন্য আমরা সর্ব স্তরের মানুষের কাছে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন রাখছি। আমরা চাই প্রত্যেকে প্রতিবাদ করুন।” ক্ষুব্ধ ওই কলেজের প্রাক্তনীরাও। তাঁদের অনেকের দাবি, স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী বারবার ঘেরাও বিক্ষোভ আন্দোলন থেকে ছাত্র সংগঠনগুলিকে বিরত থাকার পরামর্শ দিলেও খোদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ব দলীয় নীতির তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষের বাড়ি ঘেরাও করে আন্দোলন করেছে। প্রাক্তনীদের অনেকে বর্তমানে শাসক দলের নেতা হলেও তাঁরা প্রকাশ্যে ঘটনার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। যেমন, প্রদেশ তৃণমূলের সম্পাদক তথা আনন্দচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্র কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, “শুক্রবার রাতের ঘটনায় মাথা হেঁট হয়েছে। দীর্ঘদিন ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি। কিন্তু এভাবে বাড়ির সামনে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।”

প্রবীণ নেতা কল্যাণবাবুর অভিযোগ, দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারতার সুযোগ নিয়ে ছাত্র সংগঠনে যে বেনো জল ঢুকেছে সেটা শুক্রবারের ঘটনায় স্পষ্ট। অধ্যক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্র নেতা আঙুল তুলে কথা বলছেন এটা কোন ধরণের শিষ্টাচার! তিনি বলেন, “ওই কলেজের সঙ্গে আমার মতো কয়েক হাজার প্রাক্তনীর আবেগ জড়িয়ে আছে। ঘটনার খবর পেয়ে ওঁরা প্রত্যেকে যোগাযোগ করছে। কেন এমনটা হল জানতে চাইছে। কী উত্তর দেব? যারা এত বড় অন্যায় করে কলেজের সুনাম ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে, দলের জেলা নেতৃত্বের উচিত তাঁদের বের করে দেওয়া।” কল্যাণবাবু জানান, দলনেত্রীকে সব কথা চিঠি লিখে জানাবেন।

দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “অধ্যক্ষকে ঘেরাও করা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সাংগঠনিক তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে যা বলার বলব।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা কার্টুন কাণ্ডে লাঞ্ছিত অম্বিকেশ মহাপাত্রের নেতৃত্বে রবিবার ধূপগুড়িতে যান ‘আক্রান্ত আমরা’ মঞ্চের একদল প্রতিনিধি। অম্বিকেশবাবু বলেন, “এতদিন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গোলমাল সীমাবদ্ধ ছিল। এখন অধ্যক্ষ নিজের বাড়িতেও নিরাপদ নন। শাসক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে কিছু নেতা যা খুশি করে বেড়ালেও পুলিশ প্রশাসন নীরব দর্শক। অবাক লাগছে যে কোনও সভ্য দেশে বসবাস করছি।”

principal jalpaiguri ananda chandra college gherao tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy